পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘর সামলাও
৩২৭

প্রমাণ নেই। তাই তিনি নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখলেন না। দেবতার অর্চ্চনার অপরাধে ভক্ত নিগ্রহ ও লাঞ্ছনার হাত হতে অব্যাহতি পেল।

 আমাদের মধ্যে যে সব আন্দোলন হয় তাহা মুষ্টিমেয় লোকের মধ্যে আবদ্ধ। খুলনা দুর্ভিক্ষ কিম্বা উত্তর বঙ্গের বন্যার সময় অর্থের জন্য লোকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, লোকে যথেষ্ট সাড়াও দিয়াছে, কিন্তু জাতীয় কাজ—নানাবিধ জাতীয় অনুষ্ঠান যাতে জাতির ভবিষ্যৎ কল্যাণ নিহিত—এমন সব কাজের জন্য অর্থাভাব ঘটে কেন, কেন লোকে টাকা দেয় না? কারণ আমার মনে হয় এই সব জাতীয় আন্দোলনে সাধারণের সহানুভূতি থাকে না—দেশাত্মবোধ মুষ্টিমেয় জনকতক লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ—সামান্য কয়েকজন শিক্ষিত লোকের গণ্ডীর বাইরে দেশাত্মবোধ জাগে নাই বল্লেও চলে। আর সেই শিক্ষিতের সংখ্যাই বা কত?

 ইংলণ্ডে চার্লস্ দি ফার্স্টের সময় গৃহবিবাদের কথা স্মরণ করুণ, ক্রমওয়েল হামডেন পিম প্রভৃতি বীরবৃন্দ চার্লসকে বাধা প্রদান করলেন, পার্লিয়ামেণ্ট এই civil war এ অগ্রণী ছিল। তখন এক লণ্ডন সহর সাধারণের স্বার্থ রক্ষার্থ অজস্র অর্থ দিয়েছিল। রয়েলিষ্ট নোবেলম্যানেরা সাধারণের সহানুভূতি হইতে বঞ্চিত, তাঁরা অর্থ পান না, নিজেদের রৌপ্য বাসন গহনাপত্র গলিয়ে টাকা ক’রে রাজার পক্ষে লড়েছিলেন। দেশের বড় বড় সহর পার্লিয়ামেণ্টের নেতাদের অজস্র টাকা যোগায়েছিল। হলণ্ডের বড় বড় সহরের বণিকেরাও অম্লানবদনে তাঁদের সমস্ত অর্থ William, the Silent—তাদের নেতার হাতে সমর্পণ করেছিল। আর আমাদের দেশের অবস্থাটা একবার ভাবুন দেখি।

 আমাদের দেশে দেশাত্মবোধ যাদের ভিতর জেগেছে তারা হচ্ছে