পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৮
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

ময়দা যোগাইতে পারলেই স্বর্গে তাদের মৌরসী পাট্টা হয়ে গেল। শ্রাদ্ধে, মহোৎসবে, মঠমন্দির প্রতিষ্ঠায় কে কি রকম ক্রিয়াবান তার প্রতিযোগিতা চল্‌বে আর দেশের কাজে দশের কাজে—জনহিতকর কোন কাজে কেউ প্রাণান্তেও একটি পয়সাও দেবে না। নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইচ চ্যাঞ্চেলর স্যার বি, কে, বসু বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে আবেদন করে বড় কিছু পেলেন না, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে এক মাড়োয়ারী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়লের মত দুগ্ধফেননিভ মারবেল পাথরে ৮।১০ লক্ষ টাকা খরচ করে বিরাট এক মন্দির গড়ে তুলেছেন—সেই মন্দিরে আবার endowment—দেবার্চ্চনার বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ কোটী কোটী টাকা ধর্ম্মের নামে পরকালের জন্য অকাতরে ব্যয় করছে—আর শিক্ষাদানের নিমিত্ত, জ্ঞানের আলোক বিতরণের নিমিত্ত এক কাণাকড়ি দিতে লোকের প্রাণে বাজে।

 হিন্দু সমাজে নির্য্যাতিত, অধঃপতিত, পদদলিত তথাকথিত নিম্নশ্রেণীদের জন্য কেহ ভাবেনা—সমবেদনা সহানুভূতির বড়ই অভাব। সকলে সমান ভাবে শিক্ষিত হইবার কোন সুযোগ সুবিধা পায় না—শিক্ষা উচ্চ শিক্ষিত জনকতক লোকের মধ্যে আবদ্ধ। লর্ড ডাফ্‌রীন্ আমাদের বিদ্রূপ করেছিলেন—তোমরা কংগ্রেস কর—তোমরা ত মুষ্টিমেয় (microscopic minority), তোমরা আন্দোলন কর, তোমাদের চেনে কে? একথার আমরা কি জবাব দিতে পারি? সত্য সত্যিই এক জাতি? আমরা কি একজাতি বলে পরিচয় দেবার যোগ্য?

 জাতিভেদের দোষ সম্বন্ধে আমি অনেক বলেছি। আমার একজন ছাত্র আছে, যার অসামান্য কৃতিত্বের জন্য আমি আজ গর্ব্বভরে বুক ফুলিয়ে দাঁড়াইতে পারি—মেঘনাদ সাহার নাম আজ