করিয়া সুবিধামত সেই দুধ ঢালিয়া লয়। আশ্চর্য্যের বিষয় এই, যদিও এই দুধ বাহিরে রাখিয়া চলিয়া যায়, তবু কেহ ইহা স্পর্শ করে না। ইহা ছাড়া পাড়ায় পাড়ায় Dairy অর্থাৎ “গব্যজাতের-ভাণ্ডার” আছে। ইংরেজেরা সেখান হইতে ইচ্ছামত দুধ, মাখন, কিনিয়া আনিতে পারে। ইংরেজ জাতি ‘গোখাদক’ বলিয়া বিখ্যাত। তা ছাড়া, তাহারা মেষ, শূকর, শশক ও নানাবিধ পক্ষীর (Partridge) মাংস প্রচুর পরিমাণে খায়। ইহা সত্ত্বেও ইংরাজদিগের শিশু সন্তান প্রধানতঃ দুগ্ধে পরিপুষ্টি লাভ করে এবং তাহারা নিজেরাও যথেষ্ট পরিমাণে দুগ্ধ পান করে।
এখন বুঝা যাক ইহারা কেন সবল। পুষ্টিকর খাদ্য ইহারা যথেষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করে। আমি সম্প্রতি আয়রলণ্ডও ভ্রমণ করিয়াছি। ইহার একটি নাম এমারাল্ড আইল (Emerald Isle) অর্থাৎ সবুজ ঘাস পূর্ণ দ্বীপ। আয়রলণ্ডের কৃষিজাত দ্রব্যই প্রধান ধন। সেখানে কলকারখানা—কেবল মাত্র বেলফাষ্টে দৃষ্ট হয়। নিজেদের অর্থাৎ আইরিশদের অভাব মোচন হইয়া প্রচুর পরিমাণে মাখন, পণির ও ডিম্ব ইংলণ্ডে রপ্তানী হয়। হায় বাঙ্গলা! তোমার আজ কি দুরদৃষ্ট! তুমি ভারতের মধ্যে উর্ব্বরা ও সুজলা সুফলা বলিয়া খ্যাতি লাভ করিয়াছ। চাষ অর্থাৎ কৃষিজাত দ্রব্যই তোমার একমাত্র ধনসম্পত্তি। কিন্তু আজ আমি বাঙ্গলার যেখানেই যাই—বিশেষতঃ এই বর্ষাকালে, টাকায় দুই সের আড়াইসেরের বেশী দুধ মিলে না। তাহাও যথেষ্ট পরিমাণে নয়। এমনকি, একমণ, দুমণ দুধ সংগ্রহ করিতে হইলে অন্ধকার দেখিতে হয়।
আমাদের দেশের গরুর অবস্থা দেখিলে ক্রন্দন সম্বরণ করা যায় না। বিশেষতঃ পাটের চাষ বৃদ্ধি হওয়ার পূর্ব্বে যাহা কিছু গোচারণের মাঠ ছিল, তাহা বাজেয়াপ্ত হইয়া গিয়াছে। এখন গৃহস্থের গো-পালন করা