রাজধানী কলিকাতা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। অন্তর্ব্বাণিজ্য ও বহির্ব্বাণিজ্যের (Export and Internal Trade) অবস্থা দেখিলে মনে হয় যে, কলিকাতার ঐশ্বর্য্য দিন দিন কতই বাড়িতেছে। —বাড়িতেছে বটে, কিন্তু ‘বেল পাকিলে কাকের কি?’ আমি অনেকবার বলিয়াছি যে, কলিকাতার এই ধনাগম (Bank Deposit) এক্সচেঞ্জ মার্ট প্রভৃতির দ্বারা যাহা প্রতীয়মান হয়, তাহার শতকরা পাঁচভাগও বাঙ্গালীর নয়। একবার চিত্তরঞ্জন এভেনিউ দিয়া যাতায়াত করুন! দেখিবেন দুই ধারেই পাঁচতলা সৌধমালা দিন দিন উঠিতেছে। সেখানে জমি দশ হাজার হইতে পনর হাজার টাকা কাঠা। জিজ্ঞাসা কর, ইহার কয়টি বাঙ্গালীর? সমস্ত বড়বাজার, মুর্গীহাটা, এজরা স্ট্রীট, পোলক ষ্ট্রীট প্রভৃতির যত বড় বড় বাড়ী ও গুদাম ঘর, সমস্তই মাড়োয়ারী, ভাটিয়া, দিল্লীওয়ালা, পার্শি, আর্ম্মেনিয়ান ও ইহুদীদের অধিকৃত। এই গুলির দক্ষিণ হইতে সমস্ত চৌরঙ্গী রোড ইংরেজ বণিকদের করতলগত।
কলিকাতার যাবতীয় জুতা-নির্ম্মাতা হয় চীনা, না হয় পশ্চিমা। আমার এক জন আত্মীয়-যুবক, কলেজ ষ্ট্রীট মার্কেটে জুতার দোকান খুলিয়াছেন। তাঁহার তাঁবে পাঁচ ছয় জন পশ্চিম চামার কাজ করে। ইহারা প্রত্যেকেই সকাল হইতে কাজ সুরু করিয়া রাত্রি ৯টা ১০টা পর্য্যন্ত অবিরাম পরিশ্রম করে এবং এক জোড়া জুতা না শেষ করিয়া ছাড়ে না। আমি সেদিন জিজ্ঞাসা করিলাম, ইহাদের প্রত্যেকের রোজগার কত? উত্তর পাইলাম যে, এক জোড়া জুতা তৈয়ারীর মজুরী প্রত্যহ ১৷৷৵০ আনা অর্থাৎ মাসিক ৫০ টাকা। একজন ‘চীনা মিস্ত্রী’ ইহাদের অপেক্ষাও কর্ম্মঠ ও সুদক্ষ। ইহারা মাসিক একশত টাকার কমে কাজ করিতে রাজী হয় না। কলিকাতার যাবতীয়