হইতে সহজেই বোধগম্য হইবে। বাঙ্গালাদেশে ২২ লক্ষ অ-বাঙ্গালী। কলিকাতায় মাড়োয়ারী, ভাটিয়া প্রভৃতি যাহারা কায়েমী বসতবাটী করিয়াছেন, কেবল তাঁহারাই সপরিবারে বাস করিতেছেন। অবশিষ্টাংশ সকলেই এখানে একাকী আসিয়া অর্থ উপার্জ্জন করে। যদি এই ২২ লক্ষ হইতে স্ত্রীলোক ও শিশু দুই লক্ষ বাদ দেওয়া ঘায় তাহা হইলেও ২০ লক্ষ রোজগারক্ষম অ-বাঙ্গালী বাঙ্গালাদেশে ধরিতে হইবে। সহরের যাবতীয় ধনাঢ্য মাড়োয়ারী, ভাটিয়া প্রভৃতির তো কথাই নাই। বাঙ্গালাদেশে পাট, ধান, সরিষা, ভুষিমাল, এ সমস্তের কারবারই এখন প্রধানতঃ মাড়োয়ারীদের হাতে এবং যাবতীয় আমদানী ও রপ্তানীর অধিকাংশ মুনাফা ইহাদের লভ্য। অবশ্য এখানে ইংরাজ বণিকদের কথা বলিতেছি না। এখন এই বিশলক্ষ অ-বাঙ্গালীর মাসে গড়পড়তা রোজগার ৫০ টাকা ধরিলে বোধ হয় অযথা হইবে না। ২০ লক্ষ লোকের গড়পড়তা রোজগার ধরিলে প্রতিমাসে অন্ততঃ ১০ কোটী টাকা এবং বৎসরে ১২০ কোটী টাকা অ-বাঙ্গালীর হাত দিয়া বাঙ্গালাদেশ হইতে শোষিত হয়। আর অধিক কি বলিব।
প্রায় এক পক্ষকাল খুলনার সন্নিকটে সিদ্ধিপাশা, দৌলতপুর, নৈহাটী, বাগেরহাট প্রভৃতি স্থানে ঘুরিয়া স্বগ্রাম রাড়ুলী কাটীপাড়ায় কয়দিন যাবৎ অবস্থিতি করিতেছিলাম। সিদ্ধিপাশায় আসিয়া শুনিলাম গত আশ্বিন কার্ত্তিক মাসে চারি শত লোক এক প্রকার ভীষণ কালান্তক ম্যালেরিয়া রোগে কালগ্রাসে পতিত হইয়াছে। আজুগড়া এবং অন্যান্য স্থানেও এই প্রকার মহামারী হইয়া গিয়াছে। গ্রামবাসীদিগের মধ্যে যাহারা “কৃতী” অর্থাৎ একটু ইংরাজী লেখা পড়া শিখিয়াছে, তাহারা অন্নচিন্তায় দেশ বিদেশে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। যাহারা গ্রামে পড়িয়া রহিয়াছে তাহারা এক প্রকার নির্জীব, অলসভাবে—তাস, পাশা খেলিয়া,