দিবাতেও এক দফা গাঢ় নিদ্রার পর পরকুৎসা এবং কাহাকে “এক ঘরে” করিবে, মামলা মোকর্দ্দমা করিয়া কি প্রকারে উচ্ছন্ন যাইবে ইত্যাদি ব্যাপারে দিন কাটাইতেছে। অর্থাৎ শ্রীযুত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পল্লী সমাজে’ অঙ্কিত চিত্র সর্ব্বত্রই প্রযোজ্য। জলাশয়গুলি ইতিমধ্যেই শুকাইয়া আসিতেছে। আর দুই এক মাস পরে কেবল অনেক স্থলে লোকেরা ‘কাদার গোলা’ পান করিবে; সেই জল আবার গো-মহিষাদি পঙ্কিল করে। স্ত্রীলোকগণও স্নানের সময়ে সেই জলে মূত্র ত্যাগ করে এবং নানাবিধ সংক্রামক ব্যাধির সংসৃষ্ট কাপড়, কাঁথা কাচে। এই কারণেই কলেরা, আমাশয়, প্রভৃতি রোগ ছড়াইয়া পড়ে। এই গেল এক দফা।
সম্প্রতি গো মড়ক এখান হইতে বরাবর দক্ষিণ সুন্দরবন সন্নিকটস্থ আবাদ পর্য্যন্ত বিস্তৃত। মড়কে গো জাতি এক প্রকার নির্ব্বংশ হইয়া আসিয়াছে। খুলনায় দুধ বার আনা পর্য্যন্ত পাকী সের দরে বিক্রয় হইয়াছে। গ্রামগুলিতেও এক প্রকার দুধের দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়াছে। কেহ বলিতে পারেন এটা সাময়িক দুর্ঘটনা (Special Case), কিন্তু সাধারণ (Normal) অবস্থাও নিতান্ত শোচনীয়। খুলনায় এবং অন্যান্য জিলার সহরে ছয় আনা সেরে হামেসা দুধ বিক্রয় হয়। ভাবী বাঙ্গালী জাতির জীবনী শক্তি ইহাতে কি প্রকারে হ্রাস হইয়া যাইতেছে, তাহা যাঁহারা রসায়ণ শাস্ত্র ও শরীরবিদ্যার তত্ত্ব কিছু অবগত আছেন তাঁহারা সম্যক বুঝিতে পারেন। এখন শিশুদিগকেও বার্লী, মেলিন্স ফুড (Mellins food) দিয়া ক্ষুণ্ণিবৃত্তি করান হয়। অবশ্য যাহারা একটু অবস্থাপন্ন তাঁহারা বিলাতী জমা দুধ (Condensed milk) হরলিক সাহেবের তৈয়ারী (Horlick's milk) ইত্যাদি ব্যবহার করেন কিন্তু এই দৈন্য প্রপীড়িত বাঙ্গালীর কয়জন যাহাদের