চাষ হয়। এক একটা গরুর আধ মণ দুধ হয়। ঠিক ছয় বৎসর পূর্ব্বে আমি যখন লণ্ডনে ছিলাম, তখন একটা গরু একদিন ৩/৪ বার দোহনের পর একমণ দুধ দিয়াছিল। লণ্ডন, ম্যানচেষ্টার, লীডস্ প্রভৃতি সহরে যেখানে শীতকালে বরফ পড়ে, সেখানে শয্যোথ্থানেরও পূর্ব্বে গৃহস্থের ঘরে ঘরে প্রচুর পরিমাণে দুধ আসিয়া বিলি হয় এবং রাস্তায় রাস্তায়, Dairyতে দুধ, ক্রিম, মাখন অজস্র পাওয়া যায়। ইংলণ্ডে যদি কখনও গো-মড়কের সূত্রপাত হয়, তখনই হুলুস্থুল পড়িয়া যায়,—Anthrax, Foot and mouth-disease, প্রভৃতি সংক্রামক রোগ যাহাতে না ছড়াইতে পারে, তৎক্ষণাৎ তাহার প্রকৃষ্ট উপায় লওয়া হয়। আক্রান্ত পশুকে একেবারে পৃথক করিয়া ফেলা হয় এবং অনেক সময়ে তৎক্ষণাৎ তাহাকে হত্যা করিয়া ভস্মসাৎ করা হয়। কিন্তু আমরা, হিন্দুই হই, আর মুসলমানই হই—মা শীতলা ও মাণিক পীরের দোহাই দিয়া মানত করি বা জড়ভাবে বসিয়া থাকি। এদিকে এই প্রকারে জেলাময় গোজাতি ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ এক একবার গো-মড়কে যত গরু হারাই, ইংরাজরা সম্বৎসরে খাইয়া তাহার এক ভগ্নাংশও নষ্ট করিতে পারে না। যদি খাইলেই জাতি ধ্বংস হইত তাহা হইলে মুরগী ও তাহার ডিম এতদিন অপ্রাপ্য হইত।
খাদ্যের পক্ষে আর এক সর্ব্বনাশ উপস্থিত। আমার ছেলেবেলায় এ অঞ্চলের নদী সকল মাছে পরিপূর্ণ ছিল। আধমণী বড় বড় ভেটকী কথায় কথায় মিলিত। ‘এক পুঁজী’ (নয়টা) বড় গল্দা চিংড়ী ৪/৫ পয়সায় পাওয়া যাইত, এখন তাহা চোখে দেখা দায় এবং তাহার মূল্য অন্ততঃ নয় আনা। আমাদের দেশে ধীবরেরা অজ্ঞ, মূর্খ। তাহারা জাল ফেলিয়া চুণা, পুঁটি ও বড় মাছ সবই তুলিয়া ফেলে। ইংলণ্ডের নদী সকলে বাচ্চা মাছ ধরা নিষেধ। আমেরিকা ও ইংলণ্ডের মাছের