পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গালী—মরণের পথে
৩৬৩

চাষের (Pisciculture) জন্য বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত আছেন। ষ্টীমার ও রেলওয়ে হইয়া গ্রামের সমস্ত মাছ ঝাঁটাইয়া কলিকাতাভিমুখে চলিয়া যাইতেছে; দেশের লোকের জন্য কিছুই থাকে না। ফলকথা মাছ দুধই বাঙ্গালীর প্রধান পুষ্টিকর খাদ্য ছিল এবং তাহার অভাবই স্বাস্থ্যহানির প্রধান কারণ। পুষ্টিকর খাদ্য এখন দেব-দুর্ল্লভ। বাঙ্গালীর উদর এখন শাক, পাতা অর্থাৎ নটে শাক, কলমী শাক, পুঁইশাক, থোড় ইত্যাদির দ্বারা পূর্ণ হইতেছে। সামান্য ছোট চিংড়ী, চুণামাছ ইহার সহিত মিশ্রিত করিয়া এবং অপর্য্যাপ্ত লঙ্কা ও সরিষা বাটনা দিয়া চচ্চড়ী প্রস্তুত করিয়া কতক স্ত্রীলোক মনের প্রবোধ দেন যে, তাঁহারা সধবা।

 আর এক সর্ব্বনাশ উপস্থিত। কলিকাতায় এখন মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকান এবং এই সংক্রামক ব্যাধি মফঃস্বলের কলেজে এবং গ্রামেও বিস্তার হইতেছে; কেবল ঢক্‌ ঢক্‌ করিয়া যুবকগণ চা পান করে। চার খাদ্য হিসাবে কোন মূল্য নাই, কেবল স্নায়ুর উত্তেজক মাত্র ও অজীর্ণ রোগের আকর। সেদিন বাগেরহাট কলেজে ছেলেদিগকে এই প্রকার বিষ পান করিতেছে কেন জিজ্ঞাসা করিলাম। ইহারা প্রতি পেয়ালা চার পয়সা দিয়া ক্রয় করে। আমি বলিলাম যদি একসের চিড়া ৷৹ ও একসের নূতন গুড় ৶৹ (যাহা সেখানে যথেষ্ট মিলে) একবারে ক্রয় করিয়া রাখ তবে অন্যূন পনর দিনের জলখাবার সংস্থান হয়। এবং প্রতিবার দুই পয়সা হিসাবে পড়ে। আর ইহার সহিত যদি একটা কলা ও একটু নারিকেল কোরা মিশাইতে পার তাহা হইলে সর্ব্বাঙ্গ সুন্দর হয় অর্থাৎ রাসায়নিকভাবে ইহাকে perfect food কহে। একটা “দুম্যো” অর্থাৎ যাহার শাঁস একটু শক্ত হইয়াছে এরূপ নারিকেল দুইদিন ভাগ করিয়া খাওয়া যায়; তাহা ছাড়া আমি