হয় ও ভীষণ চটচটা রবে জ্বলিয়া উঠে। ইংরাজ কোম্পানীরা এই চা-চালানী ব্যবসায়ে রাজার রাজ্যের আয় উপভোগ করিতেছেন বটে, কিন্তু তাহাতেও তাঁহাদের আকাঙ্ক্ষার তৃপ্তি হয় নাই। তাঁহারা দেখিলেন, বাঙ্গালার পৌনে পাঁচ কোটি লোককে, পরন্তু সমগ্র ভারতের ৩০ কোটী অধিবাসীকে চা-খোর করিতে পারিলে টাকার মাচায় বসিয়া টাকার ছিনিমিনি খেলা সম্ভবপর হয়—টাকার গাছ পুতিয়া চুণি-পান্নার ফল পাড়িয়া খাওয়া যায়। দুঃখ এই,—এই গর্দ্দভ জাতি (বাঙ্গালী বা ভারতবাসী) আপনার মঙ্গল-বুঝে না! বুঝিবেই বা কিরূপে? তাহারা যে নাবালক নালায়েক জাতি। না হইলে তাহারা এমন স্বর্গীয় সুধার মত চা-পানের মর্ম্ম বুঝে না? এই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এক পেয়ালা চা-পানে কত তৃষ্ণা দূর হয়! —সেই চা-পান না করিয়া তাহারা পান করে কি না সরাই-কুঁজায় রক্ষিত শীতল পানীয় জল, সরবৎ, ঘোল, ডাব? ছিঃ ছিঃ! সান্ত্বনা এইটুকু যে, বিলাত-ফেরত অথবা তথাকথিত শিক্ষিতদের মধ্যে চা-পানের প্রথা প্রচলিত হইয়াছে। ইহা মন্দের ভাল। কিন্তু সাবালক ইংরাজ বণিক নাবালক দেশীয়দিগকে ত চা-পানের সুখ হইতে বঞ্চিত রাখিতে পারেন না, কেন না, তাঁহারা যে এই নাবালক জাতির অভিভাবক! অতএব তাঁহারা স্থির করিলেন যে, এই জাতিকে চণ্ডু, চরস, গাঁজা, অহিফেনের মত চায়ের নেশাতেও নেশাখোর করিতে হইবে।
তখনই চা-করদিগের সলাপরামর্শ জল্পনা-কল্পনা চলিল। সে আজ ২০/২৫ বৎসর পূর্ব্বের কথা। তখন লর্ড কার্জন ভারতের ভাগ্যবিধাতা বড় লাট। তাঁহার ন্যায় ‘ভারত-হিতৈষী’ যে চা-করদিগের পরামর্শ মথিলিখিত সুসমাচারের মত হজম করিবেন, তাহাতে বিস্ময়ের বিষয় কিছুই নাই। লর্ড কার্জ্জন চায়ের উপর কিছু সেস্ অর্থাৎ শুল্ক,