পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী হ্রাস হইতে আরম্ভ হইয়াছিল। আর তাহাই যদি হইত, তবে পূর্ব্বোক্ত সমুদয় বিদ্যার আলোচনা দাক্ষিণাত্যে আশ্রয় গ্রহণ করিত। কারণ তখায় মুসলমান আধিপত্য কখনও স্থায়ীরূপে প্রতিষ্ঠিত হয় নাই । মুসলমানদিগের শাসনকালে বাঙ্গালা দেশে, বিশেষতঃ নবদ্বীপে ও বিক্রমপুরে হিন্দু-শাস্ত্রের যথেষ্ট চর্চা ছিল । এই উভয় স্থানই নবাবের রাজধানীর সন্নিকট ছিল । স্থলভাবে বলিতে গেলে, উপনিষদ-রচনা কাল হইতে আরম্ভ করিয়া বৌদ্ধধর্শ্বের প্রৌঢ়াবস্থা পর্যন্ত এই সময় মধ্যে, হিন্দুর মস্তিষ্ক চালন রা মানসিক চিন্তার যাহা যাহা কিছু গৌরব করিবার তাহা সন্নিবেশিত হইয়াছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদগণ এই সময় অর্থাৎ খৃষ্ট জন্মের ৬০০ বৎসর পূর্ব হইতে, ৭০০ খৃঃ অন্ধ পর্যন্ত ভারতের জ্ঞানেরতি বা স্বাধীন চিন্তার যুগ আখ্যা প্রদান করিয়াছেন। এই সময়েই পাণিনি সাহিত্য জগতে অতুলনীয় ব্যাকরণ প্রণয়ন করেন । অসামান্তধীশক্তিসম্পন্ন মহাতেজা ঋষিগণ যড় দর্শন রচনা করেন এবং বুদ্ধদেব “অহিংসা পরমধর্ম্ম” ধ্বজ উত্তোলন করিয়া সাম্য, মৈত্রী এবং সর্ব্বজীবে ভ্রাতৃভাব জগতে ঘোষণা করিয়া, সমগ্র মানব-হৃদয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষার আদর্শ উপস্থিত করেন । আর্য্যভট্ট, ব্রহ্মগুপ্ত এবং বরাহ মিহির প্রভৃতি মনস্বিগণ জ্যোতিষ ও গণিত শাস্ত্রের উন্নতি ও পূষ্টিসাধন করিয়াছিলেন । কিন্তু হায় ! চিরদিন কখন সমান যায় না । উন্নতি এবং অধোগতির চক্রবং পুরিবর্তন হইতেছে। বৌদ্ধধর্মের মহত্ত্বের যেরূপ উচ্চ মাদশ প্রদর্শিত হইয়াছিল, তাহাই কিয়ং পরিমাণে উহার অধঃপতলের কারণ বলিয়া বোধ হয় । বৌদ্ধধর্ম্মের অবনতির সঙ্গে সঙ্গেই হিন্দু ধর্ম্ম বা ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পুনরভু্যদয় হইয়ছিল। ব্রাহ্মণগণ এই সময়ে হিন্দু সমাজের উপর আধিপত্য বিস্তারের পূর্ণ মাত্রায় স্থযোগ পাইয়াছিলেন। কিন্তু এই ব্রাহ্মণ সেই উপনিষদের ও ষড়দর্শনের প্রণেতা