যে কি সর্ব্বনাশ হইতেছে, তাহ ২/১টি দৃষ্টান্তে উপলব্ধ হইবে। ১০ বৎসর আগে বাঙ্গাল দেশে ৫০ লক্ষ টাকার সিগার আমদানী হইত। ২ বৎসর পূর্ব্বে যে রপ্তানী দ্রব্যের তালিকা প্রচারিত হইয়াছে, তাহাতে দেখা গিয়াছে যে, উহা দেড় কোটীতে উঠিয়াছে। কিন্তু গত বৎসর হইতে বিলাতের অনেক ফার্ম্ম যে প্রকার নানা রকমের ও নানা মার্কার চুরুটের বিজ্ঞাপন প্রচার করিতেছে এবং ইহার ফলে পাড়াগাঁয়ে পর্য্যন্ত বিদেশী চুরুট যে প্রকার ছড়াইয়া পড়িতেছে, তাহাতে বেশ বুঝা যায় যে, ১৯২৭-২৮ খৃষ্টাব্দে এই আমদানী চুরুটের পরিমাণ অন্যূন ৩ কোটি টাকা হইবে। এ কি বিড়ম্বনা! এই বাঙ্গাল দেশ তামাকের আকর বলিলেও হয়। আর এই সাতক্ষীরার সন্নিকট কালোরোয়া চিটাগুড়ের একটি প্রধান আড়ত; অথচ ‘দা-কাটা’ তামাক খাওয়া এক প্রকার ধীরে ধীরে চলিয়া যাইতেছে। মোটর-গাড়ীর আমদানীও দেখা যাইতেছে যে, এই কয়েক বৎসরে কয়েক কোটি টাকা বাড়িয়াছে। একবার ভাবিয়া দেখুন, আমেরিকার দৈনিক মাথা পিছু আয় পৌনে ১৩ টাকা। ইংরাজ জাতির মাথা পিছু আয় পৌনে ৭ টাকা। আর আমাদের মাথা পিছু আয় না হয় বড় জোর ২ আনা। অথচ আমরা বিলাতী নেশায় বিভোর হইয়া বিলাতী জাতির অনুকরণে কোটি কোটি টাকা অকারণে বিদেশে পাঠাইতেছি, আর দিন দিন হৃতসর্ব্বস্ব হইয়া অকুলপাথারে ডুবিতেছি।
কলিকাতাবাসী খুলনার জমীদারবর্গ—যাঁহাদের প্রজার মা–বাপ হওয়া উচিত—তাঁহারা যে তাঁহাদের কর্ত্তব্যপালন করেন না, তাহা পূর্ব্বেই বলিয়াছি এবং তাঁহাদের উপর কিছু তীব্রভাষা প্রয়োগ করিতেও বাধ্য হইয়াছি। তবে এ কথা বলা আমার উচিত যে, এমনও অনেক জমীদার আছেন, যাঁহারা ন্যায্য খাজানা পাইলে নিজেদের সৌভাগ্যবান্