পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালীর মস্তিষ্ক ও তাহার অপব্যবহার ১৫ কঠোর তাড়নায়, জাত্যভিমান কুলমর্য্যাদা ইত্যাদির অসহনীয় কুশাঘাতে উন্মত্ত হইয়া বাঙ্গালার বহুসংখ্যক লোক ইসলামধর্ম্মের আশ্রয় গ্রহণ করিতে বাধ্য হইল। অবশ্ব কৌলীম্ভের প্রতিষ্ঠাতাগণের সংকল্প ভাল হইতে পারে, কিন্তু যে দিন হইতে কুল ব্যক্তিগত গুণগ্রামের পুরস্কার স্বরূপ না হইয়া বংশানুগত হইল সেই দিন বাঙ্গালীর অধঃপতনের চূড়ান্ত হইল । দেবীবর ঘটক আঁসরে অবতীর্ণ হইলেন । বংশমর্য্যাদা রক্ষার জন্য "কুলজী" প্রভৃতি গভীর গবেষণা পূর্ণ শাস্ত্রের স্বষ্টি হইল। এই প্রকার শৃঙ্খল পুরিয়া বাঙ্গালী নবদ্বীপের ব্যবস্থাশাসন দ্বারা নিজের আট ঘাট বধিয়। এমন করিয়া বসিলেন যে, ভাবী উন্নতির , আর , কোন পন্থ | রহিল না। এই প্রকার কৃত্রিম অনৈসর্গিক বিধান সকল যখন হুষ্ট হইল, প্রকৃতি দেবী তাহার নিয়ম লঙ্ঘন হেতু ভীষণ প্রতিশোধ লইলেন। কুলমর্য্যাদা অক্ষুন্ন রাখিবার জন্য বহুবিবাহরূপ কীট সমাজহৃদয়ে প্রবিষ্ট হইয়া তিল তিল করিয়া কাটিতে লাগিল। আজ বর্ত্তমান বাঙ্গালা নেই পরিণাম ভোগ করিয়া হীনবীর্য্য হইয়া পড়িয়াছে। কৌলিন্যের সেই বিষময় ফল আজ বাঙ্গালার প্রতি গৃহে প্রবিষ্ট হইয়া যে স্ববৃহৎ বিষতৰু সংবৰ্দ্ধন করিয়াছে, হায়, পরিশ্রাস্ত ভারাক্রান্ত গৃহস্থ সেই বিষতরুর উৎকট জালাময়ী ছায়ায় দাড়াইয় আজ ত্রাহি ত্রাহি ডাকিতেছে ! এই ভ্রাস্ত কৌলিন্ত, তৎপর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমাজ বিভাগ, উত্তররাট, দক্ষিণরাঢ়ী, বারেন্দ্র, বঙ্গজ প্রভৃতি স্বল্প হইয়া যে দেশের কি ভয়ানক অকল্যাণ সাধন করিয়াছে ও করিতেছে আজ বিংশ শতাব্দীর উন্নত স্তরে দাড়াইয়া তাহ পরিষ্কার প্রতীয়মান হইতেছে । আমি তোমার কন্যার পাণিগ্রহণ করিব না, আমি তোমার অন্ন গ্রহণ করিব না, আমি তোমার আমন্ত্রণ গ্রহণ করিলে সমাজু হইতে বহিষ্কৃত হইব ইত্যাবিং বৈষম্য যে কি অনিষ্টসাধন করিয়াছে ওঁ করিতেছে তাহা বিজ্ঞ কেন, যে কেহই