অত্যুক্তি হয় না। তখন দাসবৃত্তি গৌরবের বিষয় বলিয়া অনুমিত হয়। এখানে একটী কৌতুকাবহ প্রকৃত ঘটনার উল্লেখ না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। হাজারিবাগ অঞ্চলে কোন মুসলমান ভদ্রলোক জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের আর্দালীর (orderly) পদপ্রার্থী হন। তাঁহার ৫০০/৬০০ শত টাকা বার্ষিক আয়ের জমাজমি ছিল ও স্বীয় গ্রামে সম্ভ্রান্ত বলিয়া কিছু প্রতিপত্তিও ছিল। লোকে তাঁহার ঈদৃশ আচরণে ক্ষুব্ধ হইয়া জিজ্ঞাসা করাতে তিনি তৎক্ষণাৎ বলিয়াছিলেন, “সরকারী নোক্রী, ইস্মে ইজ্জৎ বাড়্তা হ্যায়।” হায়, যে দেশে আজ ইজ্জতের এই অর্থ, জানি না সে দেশে অপমান কি?
আর এক দল লোক দেশে ছড়াইয়া পড়িয়াছেন, তাঁহারা প্রচলিত হিসাবে ইংরাজী শিক্ষিত সে বিষয়ে সন্দেহ নাই; কিন্তু অদৃষ্টের দোষ দিয়াই তাঁহারা নিজ নিজ দায়িত্ব ক্ষালন করিয়া থাকেন। এই অর্দ্ধ শতাব্দী ইংরাজী শিক্ষার ফলে দেশে কিছুমাত্র শিল্পবিজ্ঞানের উন্নতি সম্পাদন হইল না, ইহাতেই তাঁহাদের হৃদয় ভাঙ্গিয়া যায়। অবশ্য বলিতেই হইবে এরূপ স্থলে বক্তৃগণ প্রায়ই অন্তঃসারশূন্য, কেন না “হা হতোঽস্মি” করিবার ক্ষমতা বালক এবং স্ত্রীলোকেরও যথেষ্ট বর্ত্তমান। এই শ্রেণীর লোকগণ কর্ম্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইবার প্রয়াসী নহেন, কেন না উহাতে যথেষ্ট শ্রমের প্রয়োজন। অথচ দেশের কথা কহিতেই হইবে; কখনও বা সত্য সত্যই তাঁহাদের প্রাণে একটু আধটু লাগে, তাই যেন “স্বদেশ” “স্বদেশের যুবক” ইত্যাদি আশার কথা কহিয়া থাকেন। তাঁহাদের নিকট আমার নিবেদন এই যে, শিল্পবিজ্ঞানের উন্নতি এক দিনের কর্ম্ম নহে; উহাতে আরব্যোপন্যাসে উল্লিখিত আলাদিনের প্রদীপের ন্যায় এমন কিছু ভোজবাজী নাই যে, প্রত্যূষে স্বপ্নময়ী শয্যাত্যাগ করিয়া স্বদেশের শিল্পে রাস্তা ঘাট মাঠ থরে বিথরে সজ্জিত