পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

পথ প্রদর্শন করিবে, কল কারখানা স্থাপন করিবে এবং কোনও কোনও তীক্ষ্ণবুদ্ধি যুবক ঐতিহাসিক বা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় স্বীয় জীবন উৎসর্গ করিবে। অচিরে বাঙ্গালী জাতি জগতের উন্নত জাতিসমূহের স্থান অধিকার করিয়া বিধাতার মঙ্গলময় আদেশ প্রতিপালন করিবে।

 “Indian Business” নামক পত্রিকায় সম্প্রতি যে একটি সারগর্ভ প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে তাহার চুম্বক নিম্নে উদ্ধৃত করিয়া এই প্রবন্ধ শেষ করিতেছি।

 “একজন পাকা ব্যবসাদারকে শিক্ষিত লোক বলিতে হইবে। সম্ভবতঃ, তিনি সাহিত্যের নামজাদা পুস্তক সম্বন্ধে বা দর্শন শাস্ত্রের কূটতর্ক সম্বন্ধে কিছুই জানেন না কিন্তু তাঁহার ‘সহজ বুদ্ধি’ (common sense) আছে সেই বুদ্ধিই বাস্তবিক আসল কার্য্যকরী ন্যায়শাস্ত্রের জ্ঞান। তিনি হিসাব বুঝেন। তিনি যাহাকে হিসাব বলেন তাহাই হইতেছে গণিত-শাস্ত্র। তাঁহার যেটুকু বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আছে তাহাতে দেখা যায় তিনি রসায়ন বিদ্যা, পদার্থ বিদ্যা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং সম্বন্ধে অনেক কথা বুঝেন। তিনি সামান্যভাবে বলেন তাঁহার পাঁচটা বিষয় জানাশুনা আছে, আমরা কিন্তু দেখি নানা লোক ও নানা বিষয় সম্বন্ধে, কৃষি, বাণিজ্য এবং সমাজ সম্বন্ধে তাঁহার কেজো ধরণের বিস্তৃত জ্ঞান আছে। তাঁহাকে পরীক্ষা করিলে দেখা যাইবে যে তাঁহার নিজের দরকারী বিষয় সম্বন্ধে তাঁহার যেরূপ গভীর, পূর্ণ এবং বিস্তৃত জ্ঞান আছে একজন সাধারণ বি-এ বা এম-এর তাহা নাই। তবে প্রভেদ এই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিধারীগণ যেমন নামের পিছনে বি-এ প্রভৃতি কতকগুলি বর্ণ যোজনা করিয়া নিজের বিদ্যা জাহির করেন, ব্যবসাদার তাহা না করিয়া নিজের কার্য্য সিদ্ধির জন্য নীরবে বিদ্যার ব্যবহার করেন। সেই জন্য লোকে অনেক ব্যবসাদারকে অশিক্ষিত বলিয়া থাকে।”