উপায় নেই। এমার্সন বলেন “University makes a havoc of originality!” দলে দলে ১ম, ২য় ও ৩য় বিভাগে পাশ করানো যেন কল থেকে ১, ২, ৩ নং সুর্কী বার করা! এখানে ভাল পোড়ের ইঁট আমা-ঝামার সঙ্গে পেষাই হয়ে গিয়ে সুর্কীতে পরিণত হয়। যার স্বাভাবিক শক্তি ও প্রবৃত্তি যেমনই হউক না কেন সকলকেই যেতে হবে সেই এক গোল গর্ত্তের মধ্য দিয়ে। এতে মানুষের মৌলিকতা বড় নষ্ট হয়ে যায়। কথাগুলি খুব সত্য; কিন্তু কার্য্যক্ষেত্রে এই সহজ সত্যগুলি আমরা এত সহজে অস্বীকার করি যে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ভাবে এই একই কথা বার বার বল্তে হচ্ছে। দুচারজন যাঁরা ক্ষণজন্মা তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ধার ধারেননি; যেমন—কেশব সেন, প্রতাপ মজুমদার, কালীপ্রসন্ন ঘোষ, শিশিরকুমার ঘোষ, নলিনবিহারী সরকার, রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রভৃতি। রবীন্দ্রনাথ ডিগ্রী নিয়ে হাইকোর্টে প্রবেশ কর্লে ‘গীতাঞ্জলী’ পাওয়া যেত কিনা সন্দেহ! ব্যবসাক্ষেত্রে যে ক’জন বাঙালী কৃতী হয়েছেন স্যর রাজেন্দ্রনাথ তাঁদের অন্যতম। তাঁর ডিগ্রী কি? Calendar খুঁজলে পাবেন না। সেটা বড় শুভক্ষণ যে তিনি বি-ই হননি, হলে বড়জোর গবর্ণমেণ্টের অধীনে মোটা মাহিয়ানার একজন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে থাক্তেন। তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও কর্ম্মঠ; তাঁর মধ্যে মানুষ হব এই একটা জিদ্ ছিল! মূলধনের অভাব বা অন্য কোন প্রকার অভাব তাঁকে আট্কে রাখ্তে পারেনি! এখন একটা Capital এর (মূলধনের) কান্না শোনা যায়। কিন্তু পাশকরা ছেলের পক্ষে এটা শোভা পায় না; কারণ এম্-এ-তে ফার্ষ্টক্লাস পেয়ে রিসার্চ্ কর্ছেন এমন কোন যুবককে দশহাজার টাকার তোড়া দিলে ছ-মাসে তা খরচ ক’রে আর দশহাজার টাকা ধার ক’রে বস্বেন। তাই বল্ছি ব্যবসায়ক্ষেত্রে প্রধান জিনিষ প্রবল আগ্রহ ও চেষ্টা কোন অসুবিধাতেই দমে না যাওয়া
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অন্নসমস্যা
৪৭