পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
আজকের আমেরিকা

মহাপাপী বলেই তাদের এই দুর্দশা। আমি কিন্তু তাদের কথায় মোটেই দমলাম না। কারণ আমি ভাল করে জানতাম দরিদ্রতা কোথা হতে এসেছে। তাই চললাম গ্যাথোর দিকে।

 নিউইয়র্কের এবং আশপাশের ছোট ছোট শহর থেকে দরিদ্র লোক গ্যাথোতে এসে বাস করে। পথ ঘাট শহরের অন্যান্য স্থানেরই মত, তবে শহরের অন্যত্র এক-একটা কম্‌পার্টমেণ্টে যত লোক থাকতে পারে, এ পল্লীতে তার দ্বিগুণএরও বেশি লোক বাস করে। অকর্মণ্য হয়ে যাদের দিন কাটাতে হয় তাদের দিন যে কত কষ্টে কাটে, তা এই পাড়ার লোকরাই ভাল করে জানে।

 যে স্থানের জলবায়ু ভাল, সেখানে থাকবার স্থানের অভাব হলেও লোকের ক্ষুধা হয়। ক্ষুধার জ্বালায় পথে পথে হাঁটতে হাঁটতে অনেকে সস্তা খাদ্য খায়। এতে ক্রমেই শরীর দুর্বল হয়। স্নানের অসুবিধা থাকায় অনেকে স্নান করতে পারে না। যদিও বাইরে গরম, তবুও জলের পাইপ খুললে যে জল আসে তা ভয়ানক ঠাণ্ডা। ঠাণ্ডা জলে স্নান করা শীতের দেশের লোক সহ্য করতে পারে না, তাই তারা বিনা স্নানেই থাকে। ক্রমাগত না খেয়ে, অভ্যাসবশে যখন পথে বেরোয়, তখন অনেক সময় তারা গরম সহ্য করতে পারে না। কাজেই পথে পড়ে যায় এবং দুর্বল হৃদ্‌যন্ত্র অনভ্যস্ত উত্তাপে সহজেই স্থির হয়ে যায়। একেই বলে ‘ড্রপ ডাউন’। এই ধরনের মরণ বড়লোকদের কাছে ঘেঁষে না, গরীবদেরই বিনাশ করে। সৌভাগ্য বলব কি দুর্ভাগ্য বলব জানি না, গ্যাথোয় গিয়ে তিনটি লোককে পথে পড়ে মরতে দেখেছিলাম। পুলিশ এসে তাদের পকেট পরীক্ষা করে একটি সেণ্টও বার করতে পারে নি; পেয়েছিল কতকগুলো মামুলী কাগজপত্র, বাইবেলের পাতা, স্যোসিঅ্যালিজ্‌ম সম্বন্ধে ছোট দু-একটা পুস্তিকা ইত্যাদি। বিকালের