পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
আজকের আমেরিকা

কাছ থেকে নেওয়া হয়। সবাই যখন বর্ষাতি নিতে গেল আমিও তাদের সংগে গেলাম। বর্ষাতির কোটের রক্ষক আমাকে দেখে মহা বিপদে পতিত হল। আজ পর্যন্ত কোন কালো লোক তার কাছ থেকে বর্ষাতি কোট চেয়ে নেয় নি। সর্বপ্রথমেই বর্ষাতি রক্ষক আমাকে জিজ্ঞাসা করল আমার দেশ কোথায়? আমার দেশের নাম বললাম। লোকটি আমার কথা বিশ্বাস না করে আমি যে হিন্দু তার প্রমাণ চাইল। আমি আমার পাসপোর্টখানা দেখালাম। আমার পাসপোর্ট দেখে বর্ষাতি রক্ষক আমাকে একটি বর্ষাতি দিয়ে বিদায় করল। এসব অপমান সহ্য করেও যারা কবিত্ব ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করে আমি তাদের দলের লোক নই।

 বাইরে এসে নায়গ্রা প্রপাতের দৃশ্যাবলীর দিকে চেয়ে কালো লোকদের বর্তমান জীবনের কথাই ভাবতে লাগলাম। নায়গ্রা প্রপাতের নানা দৃশ্য চোখে আসল আর গেল কিন্তু তাতে মনে কোন দাগ কাটতে পারল না। আমার আত্মসম্মানবোধ আছে তাই নায়গ্রা প্রপাত দেখে ভাবুক সাজতে সক্ষম হই নি। যারা কাপুরুষ তারাই আত্মসম্মানের কথা ভুলে গিয়ে দার্শনিক হয়, কবি হয়। আর যারা পুরুষ তারা সকল কথা ভুলে গিয়ে আত্মসম্মানের কথাই ভাবে। জাতের অথবা স্বদেশের সর্বাংগীন স্বাধীনতাই আত্মসম্মানের একমাত্র প্রতীক।

 প্রপাত দেখা সমাপ্ত করে আমেরিকার বন্ধুদের সংগে আবার এসে মিশলাম এবং আমার মনের ভাব তাদের কাছে প্রকাশ করলাম। তারা বলল, “যতদিন পুঁজিবাদ এই পৃথিবীতে বর্তমান থাকবে ততদিন এই পশুভাবও থাকবে।” তাদের কথা শুনে সুখী হই নি। আজও বুঝতে পারি না, সত্যই এই পুঁজিবাদ পৃথিবী হতে বিদায় নিবে?

 নায়গ্রা প্রপাতের দৃশ্যাবলীর কথা বলার পূর্বে, কি করে নায়গ্রা