পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১৮৮
আজকের আমেরিকা

মুনাফা বেশি করে পাবার জন্যই জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়ে মজুর দিয়ে মজুরের সর্বনাশ করায়।

 সুখের বিষয় আমেরিকার মজুররা আর ঘুমিয়ে নাই। তারা আজ আর সংকীর্ণ জাতীয় ভাবের দাস নয়। আমেরিকার মজুর যাতে তাদের অবস্থা এবং সকল মজুরের অবস্থা ভাল করে বুঝে সেজন্য ভারতীয় বেকার মজুরগণও চেষ্টা করছে। আমেরিকার ভারতীয় মজুরগণ আর ধর্মের দাস হয়ে থাকছে না। পূর্বে তারা ধর্মের দাস হয়ে থাকবার জন্যই আমেরিকার নাগরিকত্ব হারিয়েছে, সেকথা আজ অনেকেই বুঝতে পেরেছে। আজ আর তারা তাদের পৃথক সত্ত্বা দেখে না। তারা দেখতে পেয়েছে পৃথিবীর সমস্ত মজুর একটা শ্রেণী। সেই শ্রেণীতে তাদেরও স্থান, অতএব বিশেষ করে নিজের অথবা নিজের দেশেয় মজুরের কথা চিন্তা করে কোন লাভ নাই। মজুরদের মাঝে ছোট ছোট গণ্ডিগুলিই মজুরের শক্তি ক্ষয় করে এবং ধনীদের শক্তি বাড়িয়ে দেয়।

 ফোর্ডের কারখানা দুবার দেখতে গিয়েছিলাম। বড় বড় মেশিন, বড় বড় গুদাম, বড় বড় যন্ত্র দেখে যেমন মনে বিস্ময়ের সন্‌চার হয়েছিল, তেমনি কলকারখানার ল্যাবরেটরিতে ক্ষুদ্রাদপি ক্ষুদ্র সব নিক্তি দেখে মনে হয়েছিল অত বড় মোটর তৈরী কাজে কত ক্ষুদ্র জিনিসেরও দরকার হয়। যারা এই কারখানায় কাজ করে তাদের পোষাক এবং আচার ব্যবহার দেখলে মনে হয় না এরা পদমর্যাদায় কেউ কারও চেয়ে ছোট। মনে হয় এদের মাইনের কোনও প্রভেদ নাই, এদের মধ্যে ছোট বড় নাই। কেউ কাউকে ‘বড়বাবু’ ‘বড়সাহেব’ বলে তোষামোদ করছে না, সবাই সমান ভাবে কাজ করে চলেছে। পরিশ্রম করছে বলে কারও কপালে ঘাম আর দিনের কাজ শেষ করেছে বলে কারও মুখে হাসি ফুটে উঠছে। কেউ অন্যকে হিংসা করে না। তারা প্রত্যেকে জানে কাজ করতেই