পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
আজাদ হিন্দ ফৌজ

 এমন কি যদিও আমার প্রতি দণ্ডাদেশ দেওয়া হয় তাহা হইলেও আমাকে নরহত্যার অপরাধে অভিযুক্ত করা যাইতে পারে না। যে চারিজন বিশ্বাসহন্তার হত্যার কথা বলা হইয়াছে তাহারা স্বেচ্ছায় আজাদী সেনা বাহিনীর প্রতিজ্ঞা পত্রে স্বাক্ষর করিয়া সেনাদলে যোগদান করিয়াছিল। কিন্তু আমরা যখন শত্রুর সম্মুখীন হইয়াছিলাম তখন তাহারা আমাদিগকে এমনভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছিল যে, আজাদ হিন্দ সেনা বাহিনীর আইন এবং পৃথিবীর সমস্ত সামরিক আইনানুসারে তাহাদের একমাত্র শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড।

 অতঃপর ক্যাপ্টেন সেহগল উপরোক্ত বিশ্বাসঘাতকদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা সম্পর্কে যে সব মিথ্যা ও বিকৃত ঘটনা প্রচার করা হইয়াছে তাহা বিবৃত করেন।

 বৃটিশ সৈন্যাধ্যক্ষ যদি আমাদের আত্মসমর্পণ সর্ত্তাবলী গ্রহণ না করিতেন তাহা হইলে আমরা কখনও আত্মসমর্পণ করিতাম না। আমরা শেষমূহুর্ত্ত পর্য্যস্ত সংগ্রাম চালাইয়া যাইতাম। কারণ আত্মসমর্পণের সময়ও আমাদের নিকট ছয় শত সুসজ্জিত ও সশস্ত্র সেনা ছিল। এই সেনানীবৃন্দ তাহাদের স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য শেষ রক্তবিন্দু পাত করিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল। তিনি যুদ্ধবন্দী হিসাবে ব্যবহার দারী করিয়াছিলেন। এই সম্পর্কে তিনি বৃটিশ সেনাধ্যক্ষের নিকট যে নোট দিয়াছিলেন তাহারও যথেষ্ট প্রমাণ রহিয়াছে।

 পত্রোল্লিখিত সর্ত্তাবলী পাঠ করিয়াই বৃটিশ সৈন্যাধ্যক্ষ তাহাদের আত্মসমর্পণ সর্ত্ত গ্রহণ করিয়াছিলেন। ক্যাপ্টেন সেহগল আরও বলেন ক্যাপ্টেন মোহন সিংহের সংগঠিত জাতীয় বাহিনীতে আমি ভারতের নূতন প্রভাতের আশা দেখিয়াছিলাম। আমি বুঝিয়াছিলাম যে বিশ্বের এই মহাসন্ধিক্ষণে এই শক্তিশালী জাতীয় বাহিনীই ভারতকে পরাধীনতার হাত হইতে মুক্ত করিতে পারে। দেড়শত বৎসর ধরিয়া সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ শাসন আমাদের দেশকে কি অবস্থায় রূপান্তরিত করিয়াছে এই সময়েই আমি সম্পূর্ণভাবে তাহা উপলব্ধি