পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিম্পলগাম, ১৩ই ডিসেম্বর ১৮৫৬ “মারওয়াড় প্রদেশের মধ্য দিয়া চলিতেছি-এই দেশ রাজপুতবীর ও বীরাঙ্গনাগণের রঙ্গভূমি । কিন্তু হায় । সে সব কীর্ত্তি কোথায় ১ যাইতে যাইতে IGN rCNSC, "'Tis Greece but living Greece no more'-iti (c. কিন্তু সে জীবন্ত ভাব তাহাতে নাই । পরে তথা হইতে নাসিকে উত্তীর্ণ হইলাম, যােহা শিবাজীর অযোগ্য প্রতিনিধি বাজীরাওয়ের বাসস্থান। সঙ্গে কোন ভৃত্য নাই, বন্ধু নাই, মনে অশান্তি, শরীর অপটু এই অবস্থায় ডাঙ্গা পথ দিয়া সহস্ৰ সহস্ৰ ক্রোশ নিরাপদে অতিক্রম করিতে পারিব এরূপ আশা করি নাই ।” মালেগাম, ২১এ ডিসেম্বর ‘চান্দোর দেখিলাম। অতু্যচ্চ পর্ব্বত পরিবৃত মনোজ্ঞ দুৰ্গম স্থান। যে সকল প্রদেশ মরাঠী ও পিণ্ডারী যুদ্ধে ব্রিটিষ সৈন্যের গোলাগুলি বর্ষণে ক্ষতবিক্ষত হইয়াছে, তাহাদের মধ্যে ইহা অন্যতরী, ইহার গাত্রে সেই ক্ষতচিহ্ন সকল অদ্যাপি বর্ত্তমান । বাজবাটী ( রঙ্গমহল ) দর্শন করিলাম । ইহার ভিতর প্রথম হোলকারের গাদী রক্ষিত আছে, একটি সামান্য কঠোর গাদী, সেই অশ্ব বোহী বীরসেনাবু যোগ্য অসন বটে । চান্দোর ত্যাগ করিয়া দিনের আলো থাকিতে থাকিতে তলঘাটের শোভা সম্প্রদর্শন করিলাম। চারিদিকে পাহাড় শ্রেণী-কি চমৎকার দৃশ্য ! এই পৰ্বতমালার উপর দিয়া যে রাস্তা গিয়াছে তাহার। নির্ম্মাণ কৌশল কি আর বর্ণনা করিব-যে কারিগরের ইহা মনঃকল্পনা তাহার প্রতিভা স্মরণ করিয়া দিতেছে এবং স্পষ্টাক্ষরে প্রকতির উপরে বিজ্ঞানের জয় ঘোষণা করিতেছে। ঘাট হইতে নামিয়া দেখি উপত্যকা ভূমির দৃশ্যও অতি মনোহর-শ্যামল শস্যক্ষেত্রে যেন মখমল বিছাইয়া দিয়াছে। চতুষ্প শ্বাস্থ কুঞ্জবন আবার বিহঙ্গদলের মধুর গানে প্রতিধ্বনিত-এ সকলি স্বারপর নাই মনোমুগ্ধকর। কিন্তু ভাই সে যাহাঁই হৌক, বাড়ীর দিকে আমার মম পড়িয়া রহিয়াছে’-মনে হইতেছে আমার সেই কোণের ঘরটি পৃথিবীর সকল স্থানের মধ্যে সেরা ।” ইন্দোর, ২৮ এ ডিসেম্বর ইন্দোর হইতে আমার পিতাকে যে পত্র লেখেন তাহাতে তলঘাটের শোভা সৌন্দর্য্য পুনর্বার উত্থাপন করিয়া লিখিতেছেন, “আমি Alps পর্বতে ভ্রমণ করিয়াছি, তাঙ্গার উপর দিয়া যে পথ কাটিয়া গিয়াছে তাহা প্রশংসাযোগ্য, তবুও এই গিরিপথের নিকট তাহাকে হার মানিতে হয়। এই সকল পথ দিয়া ভ্রমণ করা অতিশয় শ্রান্তিজনক । আমি বাল্য হইতে ভ্রমণে অভ্যন্ত না হইলে এতটা কষ্ট সহ্য করিতে পারিতাম না।” St.