পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“করিয়া লইয়া গিয়াছে। বালিকা বিদ্যালয়ের পণ্ডিতমহাশয় এবং অপর গ্রাম হইতে *খ শুরালয়ে-যাওয়া এক যুবক ভোরে উঠিয়া ঐ খুটি প্রভৃতি লইয়া যাইতে , দেখিয়াছেন । ইহার পর ব্রাহ্ম যুবকগণ আদালতে শুকর মোল্লার নামে অভিযোগ উপস্থিত করিলেন। সেই মামলা মজিলপুর গ্রামের পাঁচ-ছয় ক্রোশ উত্তরবর্তী বারিপুত্ব গ্রামের 'আদালতে হইল। শুনিতে পাওয়া যায়, জমিদারবাবুরা ঐ মামলার জন্য শুকর মোল্লার -নামে স্কুলের জমির এক জাল দলীল প্রস্তুত করাইয়াছিলেন। মামলা উপস্থিত হইলে, তাহারা সেস্থানের সর্বপ্রধান উকীলাদিগকে নিযুক্ত করিয়া মামলা চালাইতে প্রবৃত্ত “হইলেন। এদিকে ব্রাহ্ম যুবকগণ কলিকাতার ব্রাহ্ম বন্ধু দিগকে বলিয়া কতিপয় নবীন ব্রাহ্ম উকীল সংগ্রহ করিলেন। তদ্ভিন্ন মামলা দেখিবার কৌতুহলবশত কলিকাতা হইতে অনেক ব্রাহ্ম যুবক বারিপুরে গেলেন । আদালত গৃহে ব্রাহ্ম দর্শকের ভিড়ের কথা “শুনিয়া জমিদারবাবুরা নাকি বলিয়াছিলেন, “ও মা ! আমরা ভেবেছিলাম গ্রামের ঐ * কয়েকটা ছোড়াই বুঝি ব্রাহ্ম ; দেশে এত ব্রাহ্ম আছে তা তো জানতাম না”। যাহা হউক, মামলার শেষে শুকর মোল্লার কয়েক মাসের জন্য কয়েদ হইল । সে কয়েদ হইয়া কলিকাতার নিকটবতী আলিপুর শহরের জেলে আসিল। তখন আমি ভবানীপুরে থাকি,তাম, আমার গ্রামবাসী ব্রাহ্ম যুবক হরনাথ বসু মহাশয় কালীঘাটে থাকিতেন। শুকর মোল্লা মানিবের আদেশে অন্যায় কাজ করিয়া কয়েদ হইয়াছে, ইহার জন্য হরনাথবাবু বড়ই দুঃখিত হইয়াছিলেন। তিনি কয়েদখানায় শুকর মোল্লাকে দেখিতে ও তাহার জন্য খাবার লইয়া যাইতে লাগিলেন। যতদূর স্মরণ হয়, আমি তখনও প্রকাশ্য ভাবে ব্রাহ্মসমাজে যোগ দিই নাই, কিন্তু সাধু উমেশচন্দ্র দত্ত, কালীনাথ দত্ত, হরনাথ বসু প্রভৃতি ব্রাহ্ম যুবকদিগকে প্রগাঢ় শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিতে আরম্ভ করিয়াছি। হরনাথবাবু আমাকে শুকর মোল্লার কয়েদের জন্য দুঃখিত দেখিয়া, প্রতি রবিবার আলিপুর জেলখানায় গিয়া শুকর মোল্লাকে মিঠাই প্রভৃতি খাওয়াইয়া আসিবার ভার আমার প্রতি দিলেন, আমি তাহাই করিতে লাগিলাম। এইজন্য শুকর মোল্লার কয়েদের কথা

  • २८ ङ८छ् ।

স্বয়ং জমিদারবাবুরাও সেই জমি হইতে ব্রাহ্মদিগকে বঞ্চিত করিবার জন্য চেষ্টা করিয়া • কৃতকার্য হইলেন না, ইহাতে ব্রাহ্মদের প্রভাব বাড়িয়া গেল। তখন অন্য প্রকার নির্যাতন “আরম্ভ হইল। একজন ব্রাহ্ম যুবক “পাড়াগায়ে এ কি দায়, ধর্ম রক্ষার কি উপায় ?” --নাম দিয়া এক নাটক রচনা করিলেন। তাঁহাতে জমিদারবাবুদিগকে লোকচক্ষে উপহাসাম্পদ করিবার চেষ্টা করা হইল। বিবাদটা আরও পাকিয়া গেল। অবশেষে জমিদারবাবুৱা বাড়িতে বাড়িতে লোক পঠাইয়া বালিকা বিদ্যালয়ে মেয়ে পাঠাইতে R