পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উড়ো সাহেব যেরূপ সদাশয় পুরুষ ছিলেন, এবং আমার ভবানীপুৱা সাউথ সুবাৰ্বন স্কুলের কাজে যেরূপ সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন, তাহাতে সবিশেষ বিবরণ জানিলেও কিছু করিতেন না, এইরূপ মনে হয়। আমার মাতুলমহাশয় সোমপ্রকাশে আন্দোলন করিয়াছিলেন বলিয়াই কথাটা আমার মনে রহিয়াছে { কাব্য চর্চা ও কবিতা যুদ্ধ। মধ্যে মধ্যে আমি সোমপ্রকাশে ও এডুকেশন গেজেটে কবিতা লিখিতাম । লোকে পড়িয়া প্রশংসা করিত। তাহাতে কবিতা লিখিতে উৎসাহিত হইতাম । কবিতা লেখা সুত্রে প্যারীচয়ণ সরকার মহাশয়ের সহিত আমার একটি ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ হয় । তিনি তখন প্রেসিডেন্সী কলেজে প্রফেসারী করিতেন, এবং এডুকেশন গেজেটের সম্পাদক ও সুরাপান-নিবারিণী সভার সভাপতি ছিলেন । আমি তাহার কাগজে প্রথমে কয়েকটি ছোট-ছোট কবিতা মুদ্রিত করি। তাহাতে তিনি প্রীত হন, এবং আমাকে লিখিতে উৎসাহিত করেন । ইহার পরে এক ঘটনা ঘটিল, যাহাতে আমার কবিত্ব শক্তিকে उद्भ একদিকে লইয়া গেল । আমাদের ভবানীপুরে একজন বিলাত ফেরত ডাক্তার আসিয়া বসিলেন, তাহার হাব-ভাব চাল-চলন সবই ইংরাজী ধরনের । তিনি নিজের দ্বারে এক সাইনবোড দিলেন তাহাতে "ডাটু বলিয়া নিজের উপাধি লিখিলেন। এই লইয়া আমাদের যুবক দলে হাসহাসি পড়িয়া গেল। আমনি আমি বাঙালীর সাহেবিয়ানার উপর বিদ্রুপ বর্ষণের জন্য বিলাত-ফেরত বাঙালী সাজিয়া ‘এস এন ডট’ নাম লইয়া এডুকেশন গেজেট কবিতা লিখিতে লাগিলাম, বাঙালীর প্রিয় যাহা তাহার উপরে বিদ্রুপ বর্ষণ করিতে লাগিলাম, এবং ইংরাজী যাহা কিছু তাহার উপর আদর দেখাইতে লাগিলাম। স্বদেশী ভাবাপন্ন হইয়া আর একজন কবিতাতে তাহার উত্তর দিতে লাগিলেন । সপ্তাহের পর সপ্তাহ এই কবি৩) যুদ্ধ চলিতে লাগিল, চারিদিকে একটা চৰ্চা উঠিয়া গেল। আমার কবিতাতে কাহারও বুঝিতে বাকি থাকিল না যে, আমিও স্বদেশী ভাবাপন্ন, কেবল সাহেবী ভাবাপন্ন ব্যক্তিদিগকে বিদ্রুপ করিবার জন্য লেখনী ধারণ করিয়াছি। ঐ সকল কবিতার দুই-এক ছত্র মনে আছে। তাহা দেখিলে সকলে হাসিবেন । আমার প্রতিদ্বন্দী কবি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রশংসা করাতে আমি বঙ্গভূমির প্রতি লক্ষ্য করিয়া লিখিয়াছিলাম।-- বিদ্যার সাগর তব মূখের প্রধান, টিকিদার ভট্টাচার্য, নাহি কোনো জ্ঞান । ইংরাজ মেয়েদের প্রশংসা করিয়া লিখিলাম a