পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিয়া ব্রহ্মোপাসনা করিতে লাগিলাম। এই সময়ে আমি উপাসনার অনুকুল অনেকগুলি শোকসুচক সঙ্গীত বাধিয়াছিলাম। তাহার অনেকগুলি সাধারণ ব্রাহ্মাসমাজের ব্রহ্মসঙ্গীত পুস্তকে উদ্ধত হইয়াছে। ব্রহ্মময়ীর শ্রাদ্ধবাসৱে দুৰ্গামোহনবাবু বাহিরের কাহাকেও নিমন্ত্রণ করেন নাই। আমাদের ন্যায় কয়েকজন অন্তরঙ্গ বন্ধু, যাহারা ব্রহ্মময়ীকে ভালোবাসিতেন এবং তঁহার পীড়ার মধ্যে দেখিতে আসিয়াছিলেন, তাহাদিগকেই লইয়া উপাসনা করেন। কিন্তু উপাসনান্তে চক্ষু খুলিয়া দেখি, অনিমন্ত্রিত হইয়াও কেশবচন্দ্র সেন মহাশয় আসিয়া উপাসনাতে যোগ দিতেছেন। ব্রহ্মময়ীর প্রতি প্রীতি ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা তাহার উদ্দেশ্য ছিল। আমার ভবানীপুরে বাস কালে আমার শ্রদ্ধেয় বন্ধু নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় বড় দারিদ্র্যের মধ্যে পড়িয়া গেলেন। অগ্রেই বলিয়াছি, তিনি ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের সহিত একযোগে কার্য করিবেন বলিয়া, কৃষ্ণনগরের কর্ম ছাডিয়া সপরিবারে কলিকাতায় আসিয়া কেশববাবুর ভারত আশ্রমে উঠিয়াছিলেন, কিন্তু কেশববাবুর ও তাঁহার অনুগত ভক্তবৃন্দের সহিত মতভেদ ঘটিয়া তাঁহাকে আশ্রম হইতে বাহির হইতে হইয়াছিল। তিনি কতিপয় ব্রাহ্ম বন্ধুর সহিত কিছুদিন স্বতন্ত্র বাসায় থাকিলেন, কিন্তু আতি কষ্টে তাহার দিন নির্বাহ হইতে লাগিল । হরিনাভিতে বাস কালে আমি আমার দ্বিতীয়া পত্নী বিরাজমোহিনীকে তঁহাদের সঙ্গে রাখিয়াছিলাম, এবং প্রতি শনিবার সেখানে আসিতাম। আমি যথাসাধ্য নগেন্দ্রবাবুর ব্যয়ের সাহায্য করিতাম, কিন্তু তাহাতে তাহার দুঃখ নিবারণ হইত না । তৎপরে আমি যখন ভবানীপুরের সাউথ সুবার্বন স্কুলের হেডমাস্টার হইয়া আসিলাম, তখন বিরাজমোহিনীকে হরিনাভিতে সাধু উমেশচন্দ্র দত্তের নিকটে রাখিয়া, নগেন্দ্রবাবুকে সপরিবারে আমার ভবানীপুরের বাসায় আনিয়া রাখিলাম এবং তঁাহার একটি সন্তান জন্মিল। কিছুদিন পরে নগেন্দ্রবাবু কলিকাতায় গেলেন। হেয়ার স্কুলের হেড পণ্ডিত। ভবানীপুর সাউথ সুবার্বন স্কুল হইতে আমার উৎসাহদাতা ও সহায় রাধিকাপ্রসন্ন মুখুয্যে মহাশয় আমাকে হেয়ার স্কুলে আনিলেন। ১২০ টাকা বেতনে হেয়ার স্কুলের হেড পণ্ডিত ও ট্রানমেশন মাস্টারের নূতন পদ স্বষ্টি হইল, সেই পদে আমাকে প্রতিষ্ঠিত করা হইল। রাধিকাবাবুর পরামর্শে উড়ো সাহেব আমাকে উক্ত পদ দিলেন। শুনিলাম সাটক্লিফ সাহেব অন্য কাহাকে দিতে চাহিয়াছিলেন, তাহ রহিত করিয়া ডিরেক্টর উড়ো সাহেব আমাকে এই পদ দিলেন। পূর্বে উড়ো সাহেবের সঙ্গে যে আমার ঝগড়া হইয়াছিল এবং উড়ো সাহেব আমার প্রতি চটিয়া আছেন, রাধিকাবাবু তাহা জানিতেন। অনুমান করি, সদাশয় উড়ো সাহেৰোৱ তাহা মনে ছিল না, অথবা ব্রাধিকাপ্রসন্নবাৰু কৌশল ? Cd,