পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অক্ষয়বাবুর শেষ জীবনের কথা শাস্ত্রীমশায়ের বই থেকে এইখানে বলে এ ভাগ শেষ করিা “ইহার পরেও অক্ষয়বাবু কয়েক বৎসর। কার্য্যক্ষেত্রে দণ্ডায়মান ছিলেন। মধ্যে নর্ম্মাল বিদ্যালয় স্থাপিত হইলে কিছুদিনের জন্য তাহাৰ শিক্ষকতা করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু প্রিয় তত্ত্ববোধিনীর সংস্রব একেবারে পরিত্যাগ করেন নাই। অবশেষে ১৮৫৩ সালের আষাঢ় মাসে সন্ধ্যার পরে একদিন ব্রাহ্মসমাজের উপাসনাতে উপস্থিত আছেন, এমন সময়ে হঠাৎ মূচ্ছিত হইয়া পড়িয়া যান। তখন অনেক যত্নে তাহার চৈতন্য সম্পাদন হইল বটে, কিন্তু দুই দিবস পরে একদিন তত্ত্ববোধিনী প্রবন্ধ লিখিতেছেন, এমন সময়ে মস্তিষ্কে একপ্রকার অভূতপূর্ব জ্বালা হইয়া লেখনী ত্যাগ করিতে হইল। তদবধি সে লেখনী আর ধারণ করিতে পারেন নাই ।” “ইহার পরে একপ্রকার জীবন্মত অবস্থাতে থাকিয়াও তিনি গ্রন্থ প্রচার করিয়াছেন। অধিক কি, তঁহার ‘ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়” নামক সুবিখ্যাত ও পণ্ডিত্যপূর্ণ গ্রন্থ এই অবস্থাতেই সঙ্কলিত। তঁহার মুখে শুনিয়াছি, তিনি প্রাতঃকালে সুস্নিগ্ধ সময়ে শয্যাতে শয়ন করিয়া কোন দিন এক ঘণ্টা, কোন দিন দেড় ঘণ্টা করিয়া মুখে মুখে বলিতেন, এবং কেহ লিখিয়া যাইত ; এইরূপ কবিয়া এষ্ট মহাগ্রস্থ সঙ্কলিত হইয়াছিল।” ধন্য র্তার ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় ! এই গ্রন্থখানি অক্ষয়কুমারের অক্ষয় কীর্ত্তিারূপে বঙ্গ সাহিত্য সমাজে চিরদিন বিরাজমান থাকিবে । এইরূপে যখন তিনি শিরঃপীড়ায় অধসন্ন হয়ে পড়লেন, তখন তার সঙ্গে আমি কাশীপুরে গঙ্গার ধারের এক বাগানে মাস দুই কাটিয়েছিলুম। কি পরিবর্তন ! আগেকার সেদিন আর নাই, সে স্মৃত্তি, সে উৎসাহ নিৰ্বাসিত হয়েছে- সে অক্ষয় আর নাই। শরীরে তৈল মর্দন, ওজন করে ঔষধ সেবন, মাপ জোক করে আহারের ব্যবস্থা-এই প্রকার শরীর সেবাতেই দিনযাপন করতেন । সেই প্রখর জ্ঞানোজ্জল চিত্ত সংশয় অন্ধকারে আচ্ছন্ন । “জীবনের অবসানকালে তিনি বালিগ্রামের গঙ্গাতীরবর্তী এক উদ্যান-বাটীতে থাকিয়া এইরূপে গ্রন্থ রচনা করিতেন ; এবং অবশিষ্ট কাল উদ্ভিদতত্ত্বের আলোচনা ও সমাগত ব্যক্তিদিগের সহিত জানানুশীলনে কাটাতেন । সেখানে ১৮৮৬ সালের ১৫ই জ্যৈষ্ঠে তাহার দেহান্ত হয়।” ২০৭-২০০৮ পৃঃ দেবেন্দ্রসভার সভাসদ আরো অনেক ছিলেন, তাদের কথা বলবার আর প্রয়োজন নাই। একবার আমরা বাবামশায়ের সঙ্গে এই সব দলবল নিয়ে বরাহনগরের V