পাতা:আত্মচরিত (শিবনাথ শাস্ত্রী).pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yS শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত করিতে অগ্রসর হইয়াছিলেন। সেজন্য গ্রামে মহা আন্দোলন ও এই যুবকদিগের প্রতি মহা নির্য্যাতন উপস্থিত হয়। সেই নির্য্যাতনের মধ্যে ইহঁরা বীরের ন্যায় দণ্ডায়মান ছিলেন। সেজন্য আমরা গ্রামবাসী যুবকগণ মনে মনে ইহঁাদিগকে অতিশয় শ্রদ্ধা করিতাম। ১৮৫৯ সালে আমাদের গ্রাম-প্রবাসী টাকীনিবাসী ডাক্তার প্রিয়নাথ রায় চৌধুরীর যত্নে ও ব্রাহ্মদিগের সাহায্যে এক বালিকা-বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়া মাত্র আমার মা আমার ভগিনী দিগকে তাহাতে প্রেরণা করিলেন। প্রিয়নাথবাবু গ্রাম হইতে চলিয়া গেলে, স্কুলটি রক্ষার ভার ব্রাহ্ম যুবকগণের উপরে পড়িল। গ্রামের জমিদারগণ ধখন ব্রাহ্মদিগের প্রতি জাতক্রোধ হইলেন তখন বালিকা বিদ্যালয়টি উঠাতীয়া দিবার জন্য চেষ্টা করিতে লাগিলেন। ব্রাহ্মগণ বিদ্যালয়-গােঙ্গ নির্ম্মাণার্থ একপিণ্ড জমি মোেরশী-পাট্টাতে লইয়াছিলেন। জমিদার বাবুরা সেই জমি তইতে তাহাদিগকে বঞ্চিত করিবার জন্য চেষ্টা করিতে লাগিলেন, কিন্তু কুম্ভকার্য্য হইলেন না । ইহাতে ব্রাহ্মদের প্রভাব বাড়িয়া গেল। তখন অন্য প্রকারী নির্য্যাতন আরম্ভ হইল। একজন ব্রাহ্ম-বুবক “পাড়াগায়ে একি দায় ধর্ম্ম রক্ষার কি উপায় ?” নাম দিয়া এক নাটক রচনা করিলেন। তাহাতে জমিদারবাবুদিগকে লোক-চক্ষে উপহাসাম্পদ করিবার চেষ্টা করা হুইল । বিবাদটা আরও পাকিয়া গেল। অবশেষে জমিদার বাবুর বাড়ীতে বাড়ীতে লোক পঠাইয়া বালিকা-বিদ্যালয়ে মেয়ে পাঠাইতে নিষেধ করিলেন। অধিকাংশ গৃহস্থই সে নিষেধ শুনিল, শুধু আমার বাবা ও মা শুনিলেন না। তঁহারা উভয়ে তেজী মানুষ, অতিশয় ন্যায়পরায়ণ সত্যপরায়ণ লোক ছিলেন। বিদ্যাসাগরের প্রিয় লোক, ভঁাতারা লোকের বিরাগের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলেন না। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রকৃতির অনেক দোষগুণ আমার পিতাতে ছিল ।