পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনোমোহিনীই প্রবল করিয়াছি। তিনি সেই নামে এখনো আমার ভগিনী বলিয়া ব্রাহসমাজে পরিচিতা। r ল্লাহ সমাজে। “আনন্দবাদী দল”। কলিকাতাতে সকল দলের ব্রাহেরাই আমাকে বন্ধভাবে ডাকিতেন। তখন উন্নতিশীল ব্রাহামদলের মধ্যে ‘আনন্দবাদী দল’ নামে একটি দল হইয়াছিল, অমতবাজারের শিশিরকুমার ঘোষ ও তাঁহার ভ্রাতৃগণ এই দলের নেতা বলিয়া গণ্য ছিলেন। ইহার একটি ইতিবত্ত আছে। ১৮৬৬ সালে কেশববাব ‘জীশাস ক্লাইলট, এশিয়া এ্যান্ড ইয়োরোপ’ নামে সম্প্রসিদ্ধ বস্তৃতা করেন। তাহাতে গবণর জেনারেল লর্ড লরেন্স তাঁহার প্রতি প্রীত হন, এবং তাঁহার সঙ্গে কেশববাবর বন্ধতা সম্পবিন্ধ স্থাপিত হয়। ক্রমে কেশববাবর দলের লোকদিগের যীশ খন্টের প্রতি অতিরিক্ত ঝোঁক হইয়া পড়ে। বড়দিনের সময় যীশর ধ্যানে দিন যাপন করা, বাইবেল পড়া, বাইবেলের ব্যাখ্যা করা, খটীয় মিশনারীদিগের সহিত মিশামিশি করা, ইত্যাদি হইতে থাকে। এ কথা এখানে বলা আবশ্যক যে, বাইবেল পাঠ ও খািস্টীয় মিশনারীদিগের সহিত মিশামিশি কয়েক বৎসর পাব হইতেই চলিতেছিল, এখন সেই ভাবটা কিছল প্রবল হয়। ইহার ফলস্বরপ খন্টীয় ধম ভাবে যে অন্যতাপ ও প্রার্থনা, তাহা উন্নতিশীল দলকে প্রবল রপে অধিকার করে। পাপবোধ নব্য ব্রাহমদের সকলের অন্তরে প্রবল হইয়া উঠে, অন্যতাপব্যঞ্জক সঙ্গীতাদি রচিত হইতে থাকে। ইহার উপরে, বোধ হয় ১৮৬৭ সালে, গোঁসাইজী উদ্যোগী হইয়া তাঁহার জ্যোঠকে ডাকিয়া আনিয়া উন্নতিশীল দলকে বৈষ্ণব সংকীর্তন শোনান। তদবধি সংকীতন প্রথা ব্রাহমুদের মধ্যে প্রবেশ করে। এই সকল উত্তেজনার ফলস্বরাপ ১৮৬৮ সালে নরপজার হাঙ্গামা উপস্থিত হয়। এই পাপবোধ ও ব্যাকুলতার ভাব হইতেই ৱাহোমরা কেশববাবর চরণে পড়িয়া কাঁদিতেন। যখন একদিকে অনন্তাপ ব্যাকুলতা ও প্রার্থনার তরঙ্গ প্রবাহিত হইতেছে, তখন অপরদিকে ব্রাহমদের মধ্যে একদল লোক বলিতে লাগিলেন, “এত অন্যতাপ ও কুন্দন কেন ? প্রেমময়ের গহে এত ক্রন্দনের রোল কেন ? আনন্দময়ের প্রেমমখ দেখিয়া আনন্দিত হও ” এই দলকে ব্রাহেরা তখন “আনন্দবাদী দল’ বলতেন। শিশিরবাবা ইহাদের অগ্রণী ছিলেন। নরপজার হাঙ্গামা দেখিয়া ইহারা আমাদের ভিতর হইতে সরিয়া পড়িলেন। ১৮৬৯ সালের মাঘোৎসবে একজন মঙ্গের হইতে সমাগত ব্রাহম উপাসনান্তে কেশববাবর চরণ ধরিয়া কি প্রার্থনা আরম্ভ করিলেন। তাহাতে শিশিরবাবর দাদা হেমন্তবাব বিরক্ত হইয়া উঠিয়া, এইরহপ ব্যবহারের প্রতিবাদ করিয়া, রাগ করিয়া চলিয়া গেলেন। ত্রৈলোক্যনাথ সাক্ষ্যাল মহাশয়কেও বিরক্তি প্রকাশ করিয়া বাহিরে যাইতে দেখিলাম। এই মাঘোৎসব ভারতবষীয় ব্রহয় মন্দিরের অসম্পপণ্য বাড়িতে চাঁদোয়া খাটাইয়া সমাধা করা হইয়াছিল। . ইহার পরে অমতবাজারের দলকে আর আমাদের উপাসনাতে বড় আসিতে দেখিতাম না। কলিকাতা পটলডাঙ্গা, পটিয়াটােলা লেনে যশোরের লোকদের এক বাসা ছিল। শিশিরবাব, সেখানে মধ্যে মধ্যে আসিতেন। তিনি আসিলেই আনন্দবাদী দলের সমাগম হইত। তাঁহারা আমাকে ডাকিতেন। সে সময়ে প্রধানত সঙ্গীত ও সংকীত ন হইত। টাকী নিবাসী শ্রমেধয় বন্ধ হরলাল রায় সেই কীতানে গড়াগড়ি দিতেন। শিশিরবাব চমৎকার কীন্তন করিতে পারিতেন। তাঁহার কীতানে আমাদিগকে পাগল করিয়া তুলিত। সেখানে নািতন ধরনের সঙ্গীত হইত। কয়েক পংক্তি উদ্ধত SOS