পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাঁহার পত্নী বলিয়া উঠিলেন, “যাও যাও, তুমি শিবনাথবাবর মতো পড়াতে পার না।” এই কথায় কেশববাব খাব হাসিতে লাগিলেন। তৎপরদিন তাঁহারা যখন পতিপত্নীতে একত্র আছেন, এমন সময়ে কোনো কাজের জন্য আমি সেখানে গেলাম। আমাকে দেখিয়া কেশববাব হাসিয়া বলিলেন, “শিবনাথ! তুমি আমার সমক্ষে পড়াও তো, আমি দেখি। তুমি এমন পড়া কি পড়াও যে আমার পড়ানো ওঁর মনে লাগে না ? আমাকে বলেছেন, “তুমি শিবনাথবাবর মতো পড়াতে পার না”।” আমি হাসিয়া বলিলাম, “বাঝলেন না, আমাকে ভারি ভালোবাসেন কি না, তাই আমি যা করি ভালো লাগে। আপনাকে জেনেছেন সবোৎকৃষ্ণাট, উপদেস্টা, আমাকে জেনেছেন সর্বোৎকৃষ্ঠািট শিক্ষক। যা হোক, এ কথা শানে আমার শ্রমটা সার্থক বোধ হচ্ছে।” এই ভারত আশ্রমে বাসকালে আচার্য-পত্নীর পতিভক্তি ও শিশসলভ। সরলতার আর এক নিদর্শন পাওয়া গিয়াছিল, তাহা এখানে উল্লেখ করা ভালো। আশ্রম স্থাপিত হইয়া প্রথমে কিছ দিন ১৩ নম্পবর মিজােপর মন্ত্রীট ভবনে ছিল। তখনও বয়স্থা মহিলা বিদ্যালয়” স্থাপিত হয় নাই। সে সময়ে কেশববাব খািন্টীয় ধম প্রচারিকা কুমারী পিগটকে অনরোধ করিয়াছিলেন যে, তিনি সপ্তাহের মধ্যে কয়েকদিন বৈকালে আসিয়া আশ্রমবাসিনী মহিলাদের সঙ্গে বসিবেন, তাঁহাদের লেখাপড়া দেখিবেন, ও তাঁহাদের সঙ্গে নানা হিতকর বিষয়ে আলাপ করবেন। কুমারী পিগট কেশববাবকে ভালোবাসিতেন ও শ্রদ্ধা করিতেন, এই অনরোধ করিবামাত্র তিনি আসিতে লাগিলেন। একদিন মহিলাদের সহিত অপরাপর কথার মধ্যে কুমারী পিগট বলিলেন, “আমরা বিশবাস করি, যাহারা খািন্টীয় ধর্ম গ্রহণ না করে তাহদের অনন্ত নরক বাস হইবে।” আচায-পত্নী সেখানে ছিলেন, তিনি শনিয়া চমকিয়া উঠিলেন, বলিলেন, “ও মা সে কি গো! যে সরল ভাবে বিশবাস করতে পারছে না, তার সাজা অনন্ত নরক বাস ?” কুমারী পিগট বলিলেন, “হাঁ, আমাদের ধমে তাই বলে। এমন কি, তোমার পতিও যদি খািন্টনীয় ধমে দীক্ষিত না হন, তাঁহার ভাগ্যেও নরক বাস।” এই কথা শনিয়া আচার্য-পত্নী গম্ভীর মাতি ধারণ করিলেন, তাঁহার চক্ষে দরদর ধারে অশ্র পড়িতে লাগিল। কিয়ৎক্ষণ পরেই তিনি উঠিয়া নিজের ঘরে গেলেন। তৎপরে কুমারী পিগটের নিকট আসা ত্যাগ করিলেন। আমরা বঝাইয়া আনিতে পারিলাম না, কেশববােবও নিজে বঝাইয়া রাজি করিতে পারিলেন না। তিনি বলিলেন, “কুমারী পিগটের মাখ আর দেখব না।” কত বলা গেল, “খান্টিয়ান ধমে যাহা আছে তাহাই তিনি বলিয়াছেন, কেশববাবর প্রতি ঘণা প্রকাশের জন্য কিছ বলেন নাই।” তথাপি শানিলেন না। কিছদিন পরে বোধ হয় কুমারী পিগটের সহিত পানমিলিত হইয়াছিলেন। দ্বিতীয়া পত্নীর আগমন। ইতিমধ্যে আমার পারিবারিক জীবনে এক সামহৎ পরিবতন উপস্থিত হইল। আমার দিবতীয়া পত্নী বিরাজমোহিনীকে আনিতে হইল। ইহার দই বৎসর পাবে তাঁহার পিতা মাতা ভাই ভগিনী প্রভৃতি সমাদয় অকালে গত হন। তিনি একাকিনী তাঁহার পিতৃব্যগণের গলগ্রহী হন। তদনন্তর তাঁহার পিতৃবামহাশয় আসিয়া তাঁহাকে আনিবার জন্য আমাকে আগ্রহের সহিত অনরোধ করেন। আমি তাঁহার পনরায় বিবাহ দিবার আশায় তাঁহাকে আগ্নে কয়েকবার আনিতে গিয়া বিফলমনোরথ হইয়া, সে চেস্টা কিছদিনের জন্য পরিত্যাগ করিয়াছিলাম। এক্ষণে তাঁহার পিতৃব্যের অন্যুরোধে পরাতন কতব্যজ্ঞানটা আমার মনে প্রবল হইয়া উঠিল। কিন্তু ܡܬܠ ܠ