পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেমনি করিয়া আমাকে তাঁহার সেবার পথে আনিয়াছেন। ধন্য তাঁহার মহিমা! দপহারী ভগবান আমার দপ‘চণা করিবার জন্যই সময়ে সময়ে আমার মনঃকলিপিত অভিমান মন্দির ভাঙিয়া ধালিসাৎ করিয়াছেন, নতুবা আমার দশভপ্রবণ প্রকৃতি অহঙ্কারে পণ্য হইয়া থাকিত। তিনি আমাকে কি শিক্ষাই দিয়াছেন! আর একটি কথা। আমি যদি নিজে প্রলব্ধ না হইতাম, যদি নিজে সংগ্রামের মধ্যে না পড়িতাম, কোন পথ দিয়া মানষি অধঃপাতে যায় তাহার আভাস যদি না পাইতাম, তাহা হইলে কি প্রলব্ধ ও অধঃপতিত নরনারীকে সমবেদনা দিতে পারিতাম ? বন্ধিমান গহস্থ যেমন যে ছেলেকে কোনো বিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক করিতে চান, তাহাকে সেই বিষয়ের নিম্নতম ধাপ হইতে পা-পা করিয়া তুলিয়া থাকেন, তাহার ভ্রম দঃখ প্রলোভন সংগ্রাম সমন্দিয় তাহাকে দেখাইয়া থাকেন, তেমনি মন্তিদাতা বিধাতা তাঁহার যে দাসকে অপরের সাহায্যের জন্য নিযক্ত করেন, তাহাকেও ভালো মন্দ দাই দেখাইয়া থাকেন। বিচিত্র তাঁহার বিধাতৃত্ব, ধন্য তাঁহার কারণা! সাধারণ ব্রাহাসমাজের নামকরণ ও তাহার ফল। এখন সাধারণ ব্রাহাসমাজের কথা বলি। প্রথম বক্তব্য, সাধারণ ব্রাহমসমাজ নাম কিরাপে হইল ? আমরা যখন সর্বতন্ত্র সমাজ সন্থাপন করি, তখন আমাদের মনে দাইটি ভােব প্রবল ছিল। প্রথম, ভারতবষীয় ব্রাহাসমাজে একনায়কত্ব দেখিয়াছি, কেশববাব সবে সবা, এখানে তাহা হইবে না, এখানে সাধারণতন্ত্র প্রণালী অনসারে কার্য হইবে। দ্বিতীয়, কেশববােব ব্রাহান্নগণের ও ব্রাহামসমাজ সকলের প্রতি উপেক্ষা প্রকাশ করিয়াছেন, এখানে তাহা হইবে না, এখানে সভ্যগণের ও সমাজ সকলের মত গ্রহণ করিয়া কায হইবে। আমাদের মনে এই দাইটি প্রধান ভাব ছিল, সতরাং আমরা সমাজের নিয়মাবলী প্রণয়নের সময় এই দাইটি বিষয়ই সমাজের উদ্দেশ্যের মধ্যে প্রধান রাপে লিখিয়া দিয়াছিলাম। ধর্ম বিষয়ে কোনো নািতন মত, বা ধমজীবনের কোনো নািতন আদশ যে সস্থাপন করিতে হইবে, তাহা আমাদের লক্ষ্য সন্থলে ছিল না। বরং আমাদের ভাব এই ছিল যে, আমরাই ভারতবষীয় ব্রাহাত্মসমাজের প্রকৃত কায করিতেছি। সাধারণ ব্রাহাম্মসমাজের নামটা যে কেমন করিয়া উঠিল, ঠিক মনে নাই। যত দর সমরণ হয়, আমাদের প্রধান ভাবের দ্যোতক বলিয়া, আমাদের উৎসাহী বন্ধ পরলোকগত গোবিন্দচন্দ্র ঘোষ মহাশয় এই নামটার উল্লেখ করিয়াছিলেন। গোবিন্দবাব ভারতবষীয় ব্রাহামসমাজ সন্থাপনকতাদিগের মধ্যে একজন ছিলেন। এক্ষণে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়া সাধারণ ব্রাহমসমাজের সন্থাপন বিষয়ে ও ইহার প্রথম নিয়মাবলী নির্ণয় বিষয়ে অনেক সহায়তা করিয়াছিলেন। এমন কি, এই সময়ে তাঁহার এক পত্রের নামকরণ হইল, তাহার নাম ‘সাধারণচন্দ্র রাখিলেন। নাম শানিয়া আমরাই হাসিলাম, অপরে হাসিবে তাহাতে আশচযা কি ? নামকরণ অনন্ঠান হইতে ফিরিবার সময় আমি আনন্দমোহনবাবর গাড়িতে আসিতেছিলাম। ‘সাধারণচন্দ্র' নাম লইয়া গাড়িতে খাব হাসােহাসি হইতে লাগিল। আনন্দমোহনবাব বলিলেন, “আমার ছেলের নাম দিবার সময় তার নাম ‘অনন্ঠানপদ্ধতিচন্দ্র’ রাখিব।” নতন সমাজের নামটা কি হয়, নামটা কি হয়, আমাদের মধ্যে কিছদিন এই আলোচনা করিয়া, অবশেষে একদিন কতিপয় বন্ধ মিলিয়া আমরা মহৰ্ষির চরণ দশন করিতে গেলাম। তিনি তখন চুচুড়া শহরে গঙ্গাতীরস্থ এক ভবনে একাকী বাস করিতেছিলেন। তিনি “সাধারণ ব্রাহসমাজ” নামটা শনিয়া বলিলেন, “বেশ SG S.