পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাঁহারই কতৃত্বাধীন হইতে ভালোবাসেন। গাহের ব্যবস্থা বিষয়ে নিশিচন্ত থাকিয়া তিনি পাঠ-চিন্তাদি দ্বারা আত্মোন্নতি সাধনে নিযক্ত হইতে পারেন। গহিণীর সব ময় কতৃত্বের সঙ্গে-সঙ্গে নারী জাতির শিক্ষা ও স্বাধীনতা থাকাতে অতি চমৎকার ফল ফলিতেছে। নারীগণ সব বিধ জ্ঞান চাচার অংশী ও সববিধ শভ চেন্টার সহায় হইতেছেন। আমি কোনো বস্তৃতাদি শনিতে গেলে সভায় অধোঁক নারী দেখিতে পাইতাম। অনেক সময়ে কোনো বিখ্যাত আচায্যের উপদেশ শনিবার জন্য সস্ত্রীলোক ঠেলিয়া উপাসনা মন্দিরে প্রবেশ করিতে হইত। কোনো ভদ্রলোকেরাবাড়িতে নিমন্ত্রণাদিতে গেলে, বাড়ির সন্ত্রীলোকদিগের সহিত কোনো জ্ঞানের বা সামাজিক উন্নতির প্রসঙ্গে কোথা দিয়া সময় যাইত জানিতে পারিতাম না। অথচ প্রত্যেক ভদ্র গহিসেথর গহে নারীগণের স্বাধীনতার সঙ্গে-সঙ্গে এরপ সকল সামাজিক শাসন ও সানিয়ম দেখিতে পাইতাম যে, দেখিয়া মন মগধ হইত। এদেশের লোক নারীর অবরোধ দেখিয়া অভ্যস্ত; তাহদের সর্বভাবত মনে হইতে পারে। যে, যে-সমাজে নারীগণ সম্পপণ্য সামাজিক স্বাধীনতা ভোগ করেন, তাঁহারা বোধ হয়। নীতি অংশে হীন। অন্য দেশের কথা জানি না, ইংরাজ মধ্যবিত্ত ভদ্র গহিসেথর নারীগণ পবিত্রতার আদশ বলিলে অত্যুক্তি হয় না। ইহারাই ইংরাজ জাতির গৌরব ও শক্তির মহলে। গহে সশঙ্খিলা। নারী জাতির শিক্ষা ও সামাজিক অধিকারের পরে ইংরাজ গহস্থের গাহের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ, পারিবারিক সকল কায্যের সব্যবসথা। যে কাজটি যে সময়ে করিবার নিয়ম আছে, সে সময়ে সেটি হইবেই হইবে। উঠিবার ঘণ্টা, চা খাইবার ঘণ্টা, পারিবারিক উপাসনার ঘণ্টা, প্রাতরাশের ঘণ্টা, মাধ্যাহিক আহারের ঘণ্টা, বৈকালের চা খাইবার ঘণ্টা, ডিনারের ঘণ্টা, এইরহপ ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলিয়াছে। ঠিক সময়ে আসা চাই, ঠিক সময়ে খাওয়া চাই, ঠিক সময়ে ওঠা চাই। এইরাপ সময়ের সাব্যবস্থা থাকাতে হাতে অনেক সময় থাকে, এবং পরিবারের লোকেরা অনেক কাজে মন দিতে পারে। তৎপরে অগ্রে যে নিস্তব্ধতার বণনা করিয়াছি তাহা পরিবার মধ্যেও বিদ্যমান। গহ মধ্যে জলস্রোতের ন্যায় কাব্য স্রোত চলিতেছে, অথচ গাহের মধ্যে থাকিয়াও জানিতে পারা যায় না। যে পড়িতেছে, সে নিস্তবধ গহে নিজনে একান্ত মনে পড়িতেছে ; যে চিন্তা করিতেছে, সে নিরদিবগন চিত্তে চিন্তা করিতেছে ; যে কাজ করিতেছে, সে অপর পাশেব দািরন্ত শ্রম করিতেছে; যার কাজ তার কাজ, তাহাতে অপরের সংশ্রব নাই। এই চিন্তা ও কায্যের ব্যবসথা। অতীব মনোরম। তাহার পর আর একটি গণ, যাহাকে ইংরাজীতে অডার বলে, অর্থাৎ যেখানকার বইগলি। আবশ্যক হইলেই পাওয়া যায়, কোনো জিনিসের প্রয়োজন হইলে পাইতে দই মিনিট বিলম্ব হয় না। এ দেশে। কতবার দেখিয়াছি, গহস্বামী একস্থানে দোয়াত কলম রাখিয়া গিয়াছিলেন, বাড়ির কোনো ছেলে আসিয়া কলমটি কোথায় লইয়া গিয়াছে; গহসােবামী একটা বিল সর্বাক্ষর করিয়া দিবেন, কলমটির প্রয়োজন ; চীৎকার করিতেছেন, “ওরে রামা ! কলম নে গেল কে ? কলমটো দেখে নিয়ে আয়।” কলম আসিতে বিলম্ব হইতেছে, তাঁহার মেজাজ খারাপ হইয়া যাইতেছে ; যে বিল স্বাক্ষর করাইতে আসিয়াছে, সে দাবারে দন্ডায়মান, তাহার সময় যাইতেছে ; বাবর ক্রোধ বাড়িতেছে, মহা হলস্থল। ইংরাজ ভদ্রলোকের গহে এরপ ঘটনা বড় নিন্দার বিষয়। R89