পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পশ্চিম পরিচ্ছেদ ৷ ১৮৬৮-১৮৬৯ ছাত্রজীবনে সমাজ সংস্কার দ্বিতীয়বার বিবাহের পরই আমার হদয় পরিবতন হইলে, আমি নিরপরাধা। প্রসন্নময়ীর প্রতি যে অন্যায়াচরণ হইয়াছে, তাহার প্রতিবিধানের জন্য ব্যগ্র হই। সে মনের কথা কেবল আমার মাতামহীঠাকুরাণীর নিকট ব্যক্ত করিয়াছিলাম। প্রসন্নময়ীর পিাত্রালয় আমার মাতুলালয়ের সন্নিকট। সতরাং তিনি লোক পাঠাইয়া প্রসন্নময়ীকে নিজ ভবনে আনিলেন। আমাকে সংবাদ দিবা মাত্র আমি গিয়া প্রসন্নময়ীর সহিত সাক্ষাৎ করিলাম এবং অপরাধের মাজােনা ভিক্ষা করিলাম। তৎপরে বহদিন প্রসন্নময়ী আমার মাতুলালয়েই থাকেন। আমি শনিবার শনিবার সেখানে যাইতাম। আমি প্রসন্নময়ীর সহিত মিলিত হইয়াছি জানিয়া আমার পিতা প্রথমে অতিশয় ক্লদ্ধ হন। কিন্তু পরে আমার অনানয় বিনয়ে ও মাতাঠাকুরাণীর অনানয় বিনয়ে আদ্র হইয়া প্রসন্নময়ীকে নিজ ভবনে লইয়া যাইতে প্রস্তুত হন। ১৮৬৭ সালে তিনি আবার আমাদের গহে পদাপণ করেন। প্রথম সন্তান হেমলতা। ১৮৬৮_সালের ১১ই আষাঢ়, আমার পৈতৃক ভবনে আমার প্রথম সন্তান হেমলতার জন্ম হয়। হেম জন্মিলে বাবার সহিত আমার আর এক মনোবাদের কারণ উপস্থিত হইল। অগ্রেই বলিয়াছি, আমরা দাক্ষিণাত্য বৈদিক কুলজাত কুলীন ব্রাহমাণ। আমাদের মধ্যে তখন কুলসম্পবন্ধের প্রথা ছিল। তদনসারে হেমলতার শৈশবেই বিবাহ সম্পবিন্ধ সিনেথর করিবার কথা। আমি সে পথে বিরোধী হইলাম। তাহার বিবাহ সম্পবিন্ধ করিতে নিষেধ করিয়া পিতাকে পত্র লিখিলাম। তাহাতে বাবা কুপিত হইলেন। আমার নিষেধ গ্রাহ্য করিলেন না। আমার অজ্ঞাতসারে গোপনে একটি শিশী বালকের সহিত তাহার বিবাহ সম্প্রবন্ধ স্থাপন করিলেন। আমি শনিয়া অতিশয় দঃখিত হইলাম। আত্মনিগ্রহের সংকলপ। ঈশবর চরণে প্রার্থনা দবারা আমার হদয় পরিবতন ঘটিলে আমার প্রাণে এক নতন সংগ্রাম জাগিয়াছিল। সকল বিষয়ে আপনাকে ঈশবিরোিচ্ছার অনগত করিবার জন্য দর্যন্ত প্রতিজ্ঞা জন্মিয়াছিল। ইহার ফল জীবনের সকল্প দিকেই প্রকাশ পাইতে লাগিল। সকল বিষয়ে আপনাকে শাসন করিতে আরম্ভ করিলাম। যে যে বিষয়ে আসক্তি ছিল তাহা ত্যাগ করিতে এবং যে-কিছু অরচিকর তাহা অবলম্বন করিতে প্রবত্ত হইলাম। এই সময়ে আমি প্রথমে মাংসাহার পরিত্যাগ করি, প্রাণীহত্যা নিবারণের ইচ্ছায় নয়, কিন্তু মাংসের প্রতি আসক্তি ছিল বলিয়া। মাংসাহারে এমনই আসক্তি ছিল যে, a8