পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্ণপাত করিলেন না, পরন্তু লিখিলেন যে, তাহা হইলে তিনি আর প্রসক্ষময়ীকে বাড়িতে রাখিতে পারিবেন না এবং আমাকে সস্ত্রীক গহ হইতে নিবাসিত করবেন। আমার মাতুল। যখন এইরূপে চিঠিপত্র চলিতেছে তখন একদিন বড়ামামা আমাকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। আমি চাণ্ডগড়িপোতা গ্রামে তাঁহার ভবনে গিয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিলাম। তিনি বাবার এক পত্র আমাকে দেখাইলেন। দেখিলাম, বাবা আমাকে নিরস্ত করিতে না পারিয়া বাড়ামামার শরণাপন্ন হইয়াছেন। চিঠি পড়িয়া আমি ধীর ভাবে সমাদয় ঘটনা মাতুলের নিকট বর্ণনা করিলাম। কিরােপ নিযাতন, কিরােপ দারিদ্র্য, কিরােপ সংগ্রাম চলিয়াছে, তাহা ভাঙিয়া বলিলাম। বলিয়া তাঁহার উপদেশের অপেক্ষা वर्ग:ब्राझा द्रशिक्षाभ । মাতুলমহাশয় কিছুক্ষণ ধীর গভীর ভাবে চিন্তা করিয়া বলিলেন, “না, তুমি তাহাকে ত্যাগ করিতে পার না। তুমি তাহাদিগকে বিবাহে উৎসাহ দিয়া বিপদের সময় যদি তাহাদিগকে পরিত্যাগ কর, তাহা হইলে অধমের কাজ হইবে, কাপরষতা হইবে, আমার ভাগিনার মতো কাব্য হইবে না।” আমার হদয় হইতে কে যেন দশ মণ বোঝা নামাইয়া লইল। আমি হাঁপ ছাড়িয়া বচিলাম। তাঁহাকে বলিলাম, “আমার বাবাকে এই কথা লিখন।” তিনি বাবাকে লিখিলেন যে, সে প্রকার অনরোধ তাঁহার দেবারা হইতে পারে না। আমি তাহদের সাহায্য করতে বাধ্য। ৰন্ধতার দায়িত্ব। যোগেনদের বিবাহের পর তাহদের জন্য আমার গারতের শ্রম আরম্পভ হইল। এই পরিশ্রমের মধ্যে একবার আমি কয়েকদিন বিশ্রাম করিবার জন্য যোগেন ও মহালক্ষীর নিকট বিদায় লইয়া মাতুলালয়ে গেলাম। দই-তিনদিন মাতুলালয়ে মাতামহীর কাছে আছি, এমন সময় একদিন রাত্রি দশটার সময় ঈশানের এক জরুরি টেলিগ্রাম পাইলাম, “এখানে তোমার উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন, অবিলম্বে এস।” তখন কি করি! রেলওয়ে সেন্টশন মাতুলালয় হইতে দাই-তিন মাইল দারে। মাঠ দিয়া সেন্টশনে যাইতে হয়, কিন্তু তখন সমাদয় মাঠ। জলে পলাবিত, পথ পাওয়া দািকর। মাতামহী ঠাকুরাণী ও মামীম বারণ করিতে লাগিলেন। আমি মহা চিন্তার মধ্যে পড়িলাম। কিন্তু বড়মামা বলিলেন, “জব্ররি টেলিগ্রাম যখন করিয়াছে, তখন নিশ্চয় কোনো বিপদ ঘটিয়াছে, তুমি যাও। রাত্রি শেষে ৩টা কি ৩০টার সময় একটা ট্রেন আছে, সেই ট্রেনে যাও।” আমি তাঁহার উপদেশে সেই রাত্রেই যাত্রা করিলাম। তিনি আমার সঙ্গে এক চাকর ও লন্ঠন দিলেন। আমি জল ভাঙিয়া কোনো প্রকারে রান্ত্রি ১২টার সময় সেন্টশনে পৌছিলাম, এবং সমস্ত রাত্রি জাগিয়া কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হইলাম। আসিয়া শনি, আমি মাতুলালয়ে গেলে তৎপর দিন যোগেনের মা হঠাৎ কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন। যোগেনকে তাঁহার আত্মীয়গণ ধরিয়া লইয়া গিয়াছেন ও গতকল্য প্রাতঃকাল হইতে কোনো না কোনো ছলে তাঁহাকে আটকাইয়া রাখিয়াছেন। সকলে মিলিয়া এই স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া প্রায়শ্চিত্ত পর্বক অপর একটি বালিকাকে বিবাহ করিবার জন্য যোগেনকে পীড়াপীড়ি করিতেছেন। যোগেন মাতাকে লইয়া অতিশয় ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছেন, এমন কি, তাঁহার কাছে রাত্রি যাপন করিতে GRC