পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয়া পত্নীকে পািনবিবাহ দানের প্রস্তাৰ। এই সময় আমার মাথায় যত রকম আজগবি মৎলব আসিত, ভারত উদ্ধারের যত রকম খেয়াল ঘরিত, সকলের উৎসাহদায়িনী ছিলেন মহালক্ষী। এ জীবনে আমার অনেক চেলা জটিয়াছে, কিন্তু মহালক্ষীর মতো চেলা অলপই জটিয়াছে। এই সময়ে জন সন্টয়ার্ট মিলের গ্রন্থ পড়িয়া যোগেন কিছদিনের জন্য নাস্তিক হইয়া উঠিয়াছিলেন। তাহা লইয়া আমার সঙ্গে রোজ তক ও ঝগড়া চলিত। আমি তাঁহাকে আস্তিক করিবার চেস্টা করিতাম, কিন্তু ঝগড়ার ফল। এই হইত। যে তিনি আরও দঢ়তার সহিত নাস্তিকতা প্রচার করিতেন। তিনি হাসিয়া আমাকে বলিতেন, “পল্লীটিকে তো চেলা করিয়া লইয়াছ, যত পার ধাম তাহাকে ভজাও, আমাকে ছাড়া না!” আমি যোগেনকে না পারিয়া মহালক্ষমীকেই ভজাইতাম। দাজনে প্রতিদিন ব্রহেমাপাসনা করিতাম। আমরা তিনটি প্রাণী এমনি ‘রিফমার’ হইয়া উঠিয়াছিলাম যে, আমরা তিনজনে পরামর্শ করিয়াছিলাম যে আমার দ্বিতীয়া পত্নী বিরাজমোহিনীকে আনিয়া পনরায় তাঁহার বিবাহ দিব। তখনও আমি বিরাজমোহিনীকে পত্নীভাবে গ্রহণ করি নাই। এই ১৮৬৮ সালে আমি একবার তাঁহাকে আনিতে যাই। তখন তিনি ১৯ | ১২ বৎসরের বালিকা। বোধ হয়, আমার পিতা-মাতার পরামর্শ ভিন্ন আনিতে গিয়াছিলাম বলিয়া তাঁহারা পাঠাইলেন না। যাহাকে বিবাহ দিব ভাবিতেছি, তাহাকে পত্নীভাবে গ্রহণ করা কতব্য নয় বলিয়া তাঁহাকে পত্নীভাবে গ্রহণ করিতাম না। তাঁহাকে যে আনিয়া মহালক্ষীর কাছে রাখিতে পারিলাম না, এজন্য মহা দঃখ হইল। এল. এ. পরীক্ষাথী। তাহার পর, আমার এল. এ. পরীক্ষাতে উত্তীণ হওয়া। যোগেনের বিধবাবিবাহের ফলস্বরপ আমাদিগকে কিরােপ নিযাতন ভোগ করিতে হইয়াছিল, অগ্রেই তাহার বর্ণনা করিয়াছি। বিবাহের কিছদিন পরেই মহালক্ষীর স্বাস্থ্য ভগন হইতে লাগিল। চাকর পাওয়া যায় না, রাঁধনী পাওয়া যায় না, সেই অবস্থাতেই তাহাকে রধিতে হয়। এদিকে, যোগেন আত্মীয়-স্বজনের নিষাতনে আঁস্থির হইয়া পড়িলেন ও ঈশান মেডিকেল কলেজের ডিউটি লইয়া সবাদা অনপস্থিত থাকিতেন। বলিয়া চাকরের অনেক কাজ আমার উপর পড়িয়া যাইতে লাগিল। বাজার করা, কাঁধে করিয়া তিনতলায় জল তোলা প্রভৃতির কাজ আমাকেই করিতে হইত-এ সকল পাবেই বলিয়াছি। এই সকল করিয়া আমি পড়িবার সময় বড় পাইতাম না। সম্মখে বৎসরের শেষে পরীক্ষা আসিতেছে, কিন্তু তাহার জন্য প্রস্তুত হইতে পারিতেছি না। এইরনুপে ১৮৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। সংস্কৃত কলেজের তদানীন্তন অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সবাধিকারী মহাশয় আমাকে অতিশয় ভালোবাসিতেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বন্ধ ছিলেন। তিনি এই বিধবাবিবাহে সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছিলেন, কিন্তু আমার লেখাপড়া সব গেল দেখিয়া দঃখিত হইতেছিলেন। তিনি অক্টোবরের প্রথমে আমাকে ডাকিয়া বলিলেন, “তুমি একটা ভালো কাজে আছ, কিছু বলতে পারি না, কিন্তু আমি তোমার জন্য চিন্তিত হয়েছি। তুমি আগামী পরীক্ষাতে কলেজের মািখ রাখবে বলে মনে আশা করছিলাম, কিন্তু এখন ভয় হচ্ছে, তুমি সকলারশিপ পাওয়া দরে থােক, পাস হও কি না সন্দেহ ।” তাঁহার কথা শনিয়া মনে হইল, আমি যেন কোনো পাহাড়ের কিনারায় দাঁড়াইয়াছি, আমার সম্পমাখে গভীর গত, আর এক পা বাড়াইলেই তাহার মধ্যে পড়িব! আমার সম্মখে যে কঠিন সমস্যা উপস্থিত তাহা এক নিমিষের CS