পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

f ১৮৬২-৬৭ ] দারুণ অনুতাপ ও ঈশ্বরের শরণাপন্ন হওয়া o আমার হাস্য-পরিহাস কোথায় উবিয়া গেল। আমি ঘন বিষাদে নিমগ্ন হইলাম। পা ফেলিবার সময় মনে হইত যেন কোনও নীচের গর্তে পা ফেলিতে যুইতেছি। রাত্রি আসিলে মনে হইত। আর প্রভাত না হইলে ভাল হয় । । এই অবস্থাতে আমি ঈশ্বরের শরণাপন্ন হইলাম । আমি ঈশ্বরে অবিশ্বাস কখনও করি নাই। আমার স্মরণ আছে, এই সময়ে আমার পিতা আমার নিকট অনেক সময় সংস্কৃত নাস্তিক দর্শনের রীতি অবলম্বনে নাস্তিকতা প্রচার করিতেন। বলিতেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় আস্তিক নহেন, ইত্যাদি। ইহা লইয়া পিতা-মাতাতে কখনও কখনও ঝগড়া হইয়াছে, দেখিয়াছি। বাবার সঙ্গে এরূপ বিচারে প্রবৃত্ত আছি দেখিলে, মা বাবার প্রতি রাগ করিয়া আসিয়া আমার হাত ধরিয়া তুলিয়া লইয়া যাইতেন । বলিতেন, “রাখা রাখ, তোমার নাস্তিক দর্শন রাখি, ছেলের মাথা খেও না।” কিন্তু নাস্তিকতা আমার মনে ভাল লাগিত না ; মনে বসিত না । আমি বালক-কাল হইতে পাড়ার সমবয়স্ক । বালকদিগের সহিত সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্ত্তী বিষয়ে আলোচনা করিতে ভাল বাসিতাম। কিন্তু ইতিপূর্বে আমি ঈশ্বরের সহিত আত্মার সম্বন্ধ বিষয়ে কখনও গুরুতররূপে চিন্তা করি নাই। ঈশ্বর-চরণে প্রার্থনার অভ্যাস ছিল না । এই মানসিক গ্লানির অবস্থাতে তাহা করিতে আরম্ভ করিলাম। এই সময়ে ভক্তিভাজন , উমেশচন্দ্র দত্ত মহাশয় আমার মানসিক অবসাদের কথা অবগত হইয়া আমাকে একখানি থিওডোর it-Étics: “Ten Sermons and Prayers পাঠাইয়া দিলেন । পার্কারের প্রার্থনাগুলি যেন আমার চিত্তে নবজীবন আনিল। আমি প্রতিদিন রাত্রে শয়নের পূর্বে একখানি খাতাতে একটা প্রার্থনা লিখিয়া পাঠ করিয়া শয়ন করিতে লাগিলাম। কেবল তাহাই নহে ; দিনের মধ্যে প্রত্যেক দশ পািনর মিনিট অন্তর ঈশ্বর স্মরণ করিতাম ও