পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS 8 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচরিত [ ৪র্থ পরিা: শেষে এমনি দাড়াইল যে, আমি দুই চারি দিন দেখা না করিলে মাসী ডাকিয়া পাঠাইতেন ; এবং আমাকে কঠিন ছেলে বলিয়া তিরস্কার করিতেন ; এটা ওটা খাওয়াইতেন ; ঘরকন্নার কথা কতৃ শুনাইতেন ; আমার নিকট কিছুই গোপন রাখিতেন না। আমি আপ্যায়িত হইয়া হয়, তাঁহাদের কঠিন ছেলে ব্রাহ্মসমাজের কাজে ও নানা বিষয়ে মাতিয়া কোথায় গিয়া পড়িল, তাহারা কোথায় গিয়া পড়িলেন । মাসীকে আর কতকাল দেখিলাম না! এখন ভাবিয়া দেখি, মাসী যে আমাকে কঠিন ছেলে বলিয়াছিলেন, তাহা ঠিক বলিয়াছিলেন। আমি মানুষের নিকট যতটা প্রেম পাইয়াছি ততটা প্রেম দিতে পারি নাই। এ জীবনে যে আমি সর্ব্বদা নানা সংগ্রামের মধ্যে বাস করিয়াছি, তাহা বোধ হয় আমার প্রেমিক বন্ধুদের প্রতি আমার সমুচিত প্রেমের অভাবের একটা কারণ। নির্য্যাতন, বিদ্বেষ, বিবাদ প্রভৃতির মধ্যে পড়িয়া মন উত্তাপের মধ্যে বাস করিয়াছে, প্রেমের সুশীতল বায়ু সেবন করিবার সময় পায় নাই । যাহা হউক, আমি এই মাসীর এত স্নেহের এই মাত্র প্রতিদান করিতাম যে, তঁহাদের মহিমকে রোজ কাছে স্থা নিয়া পড়া বলিয়া দিতাম। ১৮৬৭ সালের শেষভাগে ইহার কলিকাতার শাকারিটোলাতে একবাড়ীতে গিয়া থাকিবেন বলিয়া স্থির করিলেন। তখন মাসী আমাকে সঙ্গে যাইবার জন্য ধরিয়া বসিলেন। আমি তঁহাদের অনুরোধ অগ্রাহ করিতে পারিলাম না। আমরা আসিয়া শাকারিটোলাতে বাস করিতে লাগিলাম। আমি ও মহিম বাহিরবাড়ীতে এক দ্বিতীয়তলা গৃহে বাস কিরিতাম। সে ঘরটী বাহিরবাড়ীতে কইলেও ঠাকুয়াদালানের ছাদের উপায় দিয়া অন্দর মহল হইতে সে ঘরে যখন ইচ্ছা আসা যাইত । সুতরাং মাসী কাজকর্ম্ম হইতে একটু অবসর পাইলেই আমার ঘরে ।