পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>»Vo শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত । [ ৪র্থ পরিঃ আমি ইহাদিগকে পরিত্যাগ করিয়া যোগেন্দ্রের সঙ্গে থাকিবার জন্য যাই। কিরূপে সে বিবাহ ঘটে, পরবর্তী পরিচ্ছেদে তাহা বলিতেছি। যাইবার সময় মাসীকে বিশেষতঃ সেই বালিকাটিকে ছাড়িয়া যাইতে বড় ক্লেশ হইয়াছিল, সে জন্য সে বিচ্ছেদটা মনে আছে। সে যেন আমার মেহ পাইয় প্রাণ দিয়া আমাকে আঁকুড়াইয়া ধরিয়াছিল, সেই আলিঙ্গনপাশ ছিড়িয়া যাওয়া আমার পক্ষে ক্লেশকর হইয়াছিল। আমি যখন তঁহাদিগকে পরিত্যাগ করিবার সংকল্প জানাইলাম, তখন মেয়েটা কয়দিন কঁাদিয়া কঁাদিয়া চােখ ফুলাইয়া ফেলিল। অবশেষে যখন আমি জিনিসপত্র লইয়া বিদায় হই, তখন বলিল, “দাদা, একটু দাড়াও, একবার ভাল করে প্রণাম করি।” এই বলিয়া, তাহার অঞ্চলটি গলায় দিয়া গলবস্ত্র হইল এবং আমার চারিদিকে প্রদক্ষিণ করিতে লাগিল ৷ একবার প্রদক্ষিণ করিয়া আসে ও আমার চরণে প্রণত হয় এবং ডাক ছাড়িয়া কঁদে ; আমিও তার সঙ্গে কাদি । সেই যে কাদিয়া বাল্যবিবাহকে ঘৃণা করিতে করিতে সে বাড়ী হইতে বিদায় লইলাম, সেই ঘূণা, অদ্যাপি আমার মনে জাগ্রত রহিয়াছে। কেহ দশ এগার বৎসরের মেয়ের বিবাহ দিতেছে দেখিলে মনে বড় ক্লেশ৷ হয়। কি আশ্চর্য্য ! বাল্যবিবাহের অনিষ্টফল পূর্বে কত দেখিয়াছিলাম ; শাশুড়ীর হাতে বৌয়ের প্রাণ গেল, কতবার শুনিয়াছিলাম ; বালিকা পত্নী বিরাজমোহিনীকে হাত পা বাধিয়া সপত্নীর উপরে ফেলিয়া দিল ইহাও দেখিয়াছিলাম ; কিন্তু ঐ মেয়েটির চক্ষের জলে শিশু বালিকাদিগকে হাত পা বাধিয়া দান করার উপরে আমাকে যেরূপ জাতক্রোধ করিল, এরূপ অগ্রে করে নাই। কোন ঘটনাতে মানুষের মনে কোন ভাব আসে, ভাবিলে আশ্চর্য্যান্বিত হইতে হয়। ] হায় হায়! ঘটনাচক্রে মেয়েটা কোথায় গেল, আমি কোথায় গিয়া । পড়িলাম! তৎপরে বহু বৎসর পরে একদিন বিধবাবেশে মলিনবিস্ত্রে