পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত । at পরিঃ ! ܘܘܕ করিতাম। এই আড়াই মাসের মধ্যে শয্যাতে যাই নাই। সন্ধ্যার সময় চাকরেরা আলো জালিয়া দিয়া যাইত, সেই আলো সমস্ত রাত্রি থাকিত। বড় ঘুম পাইলে দুই চারি ঘণ্টা পুস্তক মাথায় দিয়া সেই ঘরেই ঘুমাইতাম। যতদূর স্মরণ হয়, পাঠের ঘণ্টা এইরূপ ভাগ করিয়া লইয়াছিলাম,-অঙ্ক ছয় ঘণ্টা, (দুই ঘণ্টা গ্রন্থ পড়া ও চার ঘণ্টা অঙ্ক কষা ); ইতিহাস ছয় ত এক ঘণ্টা, লজিক দুই ঘণ্টা, সর্ব্বশুদ্ধ ঘণ্টা ইংরাজী তিন ঘণ্টা, সংস্কৃ প্রায় আঠার ঘণ্টা এইরূপ পড়িতে পড়িতে শরীর ও মন সময় সময় । বড় অবসন্ন হইয়া পড়িত। তখন পড়া ফেলিয়া দিয়া বাহিরে যাইতে ইচ্ছা করিত। সেই সময়ে যোগেন ও মহালক্ষ্মীর মুখ মনে করিয়া মনে দুরন্ত প্রতিজ্ঞ আসিত। ভাবিতাম, যাহাদের প্রধান উৎসাহদাতা হইয়া এই সংগ্রামের মধ্যে ফেলিয়াছি, তাহদের সাহায্য করিতে না পারিলে কিরূপে নিশ্চিন্ত থাকিব ? প্রাণ থাক। আর যাক, একবার মরণ-বাচন চেষ্টা করিয়া দেখিতে হইবে। অমনি মনে প্রার্থনার উদয় হইত, “হে ঈশ্বর, এই সংগ্রামে আমার সহায় হও ।” তখন দিনের মধ্যে বহুবার প্রার্থনা করিতাম । লোকে যেমন শ্রমের মধ্যে বারবার চা খাইয়া সবল হয়, আমি তেমনি বারবার প্রার্থনা করিয়া সবল হাইতাম । s এইরূপ শ্রম করিতে করিতে যখন আড়াই মার্চ পরে পরীক্ষার সময় আসিল, তখন দেখিলাম, এক ঘরে আড়াই মাস বন্ধ থাকিয়া ও নীচের ঘরে শুইয়া শুইয়া কোমরে বাত ধরিবার উপক্রম হইয়াছে। পরীক্ষা দিতে যাইবার সময় একটী বালকের কঁাধে হাত দিয়া পরীক্ষার হলে গেলাম ও মহালক্ষীর মৃতু্য ।-বোধ হয় ১৮৬৯ সালের জানুয়ারীর শেষভাগে