পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»vod, o ) ব্রাহ্মসমাজে পাপবোধ ও আনন্দবাদী দল Ved কয়েক বৎসর পূর্ব হইতেই চলিতেছিল; এখন সেই ভাবটা কিছু প্রবল হয়। ইহার ফলস্বরূপ খ্রীষ্টীয় ধর্ম্মভাব যে অনুতাপ ও প্রার্থনা, তাহা উন্নতিশীল দলকে প্রবল রূপে অধিকার করে ; পাপবোধ নব্য ব্রাহ্মদের সকলের অন্তরে প্রবল হইয়া উঠে ; অনুতাপ-ব্যঞ্জক সংগীতাদি রচিত হইতে থাকে। ইহার উপরে, বোধ হয় ১৮৬৭ সালে, গোসাইজী উদ্যোগী হইয়া তাহার জ্যেষ্ঠকে ডাকিয়া আনিয়া উন্নতিশীল দলকে বৈষ্ণব সংকীর্ত্তন শুনান। তদবধি সংকীর্ত্তন-প্রথা ব্রাহ্মদের মধ্যে প্রবেশ করে । এই সকল উত্তেজনার ফলস্বরূপ ১৮৬৮ সালে নরপূজার হাঙ্গামা উপস্থিত হয়। এই পাপবোধ ও ব্যাকুলতার ভাব হইতেই ব্রাহ্মেরা কেশববাবুর চরণে পড়িয়া কঁদিতেন। যখন একদিকে অনুতাপ, ব্যাকুলতা ও প্রার্থনার তরঙ্গ প্রবাহিত হইতেছে, তখন অপরদিকে ব্রাহ্মদের মধ্যে একদল লোক বলিতে লাগিলেন, “এত অনুতাপ ও ক্রন্দন কেন ? প্রেমময়ের গৃহে এত ক্রন্দনের রোল কেন ? আনন্দময়ের প্রেমমুখ দেখিয়া আনন্দিত হও ।” এই দলকে ব্রাহ্মেরা তখন “আনন্দবাদী দল” বলিতেন। শিশিরবাবু ইহঁদের অগ্রণী ছিলেন। নরপূজার হাঙ্গামা দেখিয়া ইহঁরা আমাদের ভিতর হইতে সরিয়া পড়িলেন। ১৮৬৯ সালের মাঘোৎসবে একজন মুঙ্গের হইতে সমাগত ব্রাহ্ম, উপাসনান্তে কেশববাবুর চরণে ধরিয়া কি প্রার্থনা আরম্ভ করিলেন। তাহাতে শিশিরবাবুর দাদা হেমন্তবাবু বিরক্ত হইয়া উঠিয়া, এইরূপ ব্যবহারের প্রতিবাদ করিয়া রাগ করিয়া চলিয়া গেলেন। ত্রৈলোক্যনাথ সান্ন্যাল মহাশয়কেও বিরক্তি প্রকাশ করিয়া বাহিরে যাইতে দেখিলাম। এই মাঘোৎসব ভারতবর্ষীয় ব্রহ্ম মন্দিরের অসম্পূর্ণ বাড়ীতে চাঁদোয়া খাটাইয়া সমাধা করা হইয়াছিল। ইহার পরে অমৃতবাজারের দলকে আর আমাদের উপাসনাতে বড় আসিতে দেখিতাম না। কলিকাতা পটলডাঙ্গা, পটুয়াটােলা লেনে