পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [C2 এখন দিন দিন অন্তহিত হইতেছে। কুলসম্বন্ধের অর্থ এই যে, কুলীন বৈদিকের ঘরে কন্যা জন্মিলেই দুই একমাসের মধ্যে সমশ্রেণীর কোনও শিশু বালকের সহিত তাহার বিবাহ সম্বন্ধ স্থির করিয়া রাখা হইত। তৎপরে কন্যা আট নয়। বৎসরের হইলেই বিবাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হইত। যদি বিবাহের পূর্ব্বে বাগদত্ত বরের মৃত্যু হইত, তাহা হইলে কন্যা “অন্তপূর্ব্বা।” নাম পাইত। তৎপরে আর তাহার কুলীন বরের সহিত বিবাহ হওয়ার সম্ভাবনা থাকিত না ; মৌলিক বরের সহিত বিবাহ হইত। আমার দুই পিসী, এইরূপে “অন্যপূর্ব্ব৷” হইয়া মৌলিক বরের সহিত বিবাহিত হইয়াছিলেন । এই প্রথানুসারে আমার পিতার ছয় কি সাতমাস বয়সের সময়, কলিকাতার ছয় ক্রোশ দক্ষিণ-পূর্ব্ববর্ত্তী চাঙ্গািড়পোতা গ্রামের হরচন্দ্র হ্যায়রত্ন মহাশয়ের একমাস-বয়স্ক প্রথম কন্যার সহিত কুলসম্বন্ধ করিয়া রাখা হইয়াছিল। তদনুসারে দশ্বম কি একাদশ বৎসর বয়সে আমার পিতার বিবাহ হইল। মাতামহ - আমার মাতামহ হরচন্দ্র পৃষ্ঠায়রত্ন মহাশয় একজন সুবিজ্ঞ, সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ও অধ্যাপক ছিলেন । কলকাতা কাসারিপাড়াতে তাহার টােল চতুষ্পাঠী ছিল। তাহার জ্যেষ্টপ ও সুবিখ্যাত সোমপ্রকাশ-সম্পাদক দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ মহাশয় বঙ্গ ॥াহিত্য-জগতে চিরদিনের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ কবিয়াছেন। আমার মাতামহ কবিবর ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের প্রতিষ্ঠিত “প্রভাকর” নামক পত্রিকা সম্পাদনে তাহাস সাহায্য করিতেন। তিনি উত্তরকালে মহাত্মা ডেবিড হেয়ারের প্রতিষ্ঠিত বাঙ্গলা পাঠশালাতে পণ্ডিতী কর্ম্ম লইয়াছিলেন, এবং আমার বড় মামা সংস্কৃত কলেজ হইতে উর্ত্তীর্ণ হইয়া সেই কলেজেই কর্ম্ম পাইলে, মাতামহ মহাশয় মিতব্যয়িতার গুণে কিঞ্চিৎ অর্থ সঞ্চয় করিয়া পৈতৃক ভিটা হইতে উঠিয়া স্বগ্রামেই একটি দোতালা পাকা বাড়ী নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন। ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের পক্ষে ইহা এক নূতন ব্যাপার বলিয়া ঐ দোতলা বাড়ী