পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S& শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ७ंथभ মধ্যে এক পরিবারের একটি ছেলে ছুটিয়া গিয়া ঘটােটা লইয়া জলপান করিতে বসিয়া গেল। মাতামহী ভয় পাইয়া তাহার হাত ধরিয়া বলিতে লাগিলেন, “ওৱে, তুই অত জল খাসনি, আমি টাকা দিব বলিছি, দিবই,” এই বলিয়া একটি টাকা আনিয়া তাহার হাতে দিলেন । আর একবার একদিন গ্রীষ্মকালে ভয়ানক রৌদ্র, উঠান তাতিয়া অগ্নিসমান হইয়াছে। এমন সময় মাতামহী ঠাকুরাণীর একবার গোলাতে যাওয়ার আবশ্যক হইল। উঠানে পা দিয়াই বলিয়া উঠিলেন, “বাবারে ! যেন আগুন, এ উঠানে যদি কেউ দুদণ্ড বসতে পারে, তবে তাকে দুটাকা দিই।” আমনি একজন যুবক প্রস্তুত ! সে লম্বন্ধ দিয়া সেই তপ্ত উঠানের মধ্যে গিয়া বসিল । মাতামহী একেবারে অস্থির হইয়া উঠিলেন : “ওরে তুই উঠে আয়, আমি দুটাকা দিচ্ছি,” বলিয়া তাহাকে দুইটাকা দিলেন । বাস্তবিক তাহার মত কোমল-হৃদয়া দয়াশালা, স্বজনবৎসলা, উদারপ্রকৃতি, সত্যপরায়ণ নারী’ অল্পই দেখিয়াছি। আমার বড়মামা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ মহাশয় ধর্ম্মভীরুতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। সে ধর্ম্মভীরুতা তিনি জননী হইতে পাইয়াছিলেন । মাতামহীর বৃদ্ধাবস্থায় আমার দুই মামী যখন ঘরকন্নার ভার লাইলেন ও তাঁহাকে সংসারের খুটিনাটি হইতে নিস্কৃতি দিলেন, ত ,দ, ধর্ম্মচিন্তা, দরিদ্রের সেবা ও গৃহস্থ শিশুগণের পালন, তাহার প্রধান কাজ দাড়াইল । তিনি প্রতিদিন প্রাতে প্রায় অৰ্দ্ধক্রোশ পথ হাটিয়া গঙ্গাস্নান করিতে যাইতেন, এবং স্নানান্তে ফিরিবার সময়, পথের দুই পাশ্বে পরিচিত দরিদ্র পরিবারদিগকে দেখিয়া আসিতেন । এটি তাহার নিত্য ব্রতের মধ্যে হইয়াছিল। এজন্য তিনি নিজ ব্যয়ের টাকা হইতে কয়েক আনা পয়সা সঙ্গে লইতেন, এবং গৃহে ফিরিবার সময় বাড়ীতে বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া আবশ্যকমত কিছু কিছু সাহায্য করিতেন, এবং নিজের সাধ্যে না কুলাইলে, পুত্রদিগকে অনুরোধ করিয়া সাহায্য করাইয়া দিতেন ।