পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

v শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ - “শিব নাচি নাচি যায়” ।-আমাদের বাড়ীর পাশে জ্ঞাতিদের বাড়ীতে এক গৌরাঙ্গী বিধবা যুবতী থাকিতেন, তিনি সম্পর্কে আমার পিতার খুড়ী। আমার মাকে অন্নদামঙ্গল, রামায়ণ, মহাভারত, রোমিও জুলিয়েট প্রভৃতি পড়িতে দেখিয়া তার লেখাপড়া শিখিবার বড় ইচ্ছা! হইয়াছিল। তিনি আমাকে তার ঘরে ডাকিয়া লইয়া খাইবার জন্য কিছু মিষ্টদ্রব্য হাতে দিয়া, অনেক খোসামোদ করিয়া বর্ণপরিচয় করিতে বসিতেন, এবং হাতে তালি দিয়া আমাকে নাচাইতেন, আর বলিতেন, “শিব নাচি নাচি যায়, শিব ডম্বুরু বাজায়, ডিমি ডিমি ডিমি ডিমি ডাম্বুরু বাজায়।” আমি তালে তালে না।চিতাম। ইহার পরে আমার সহৃদয় খুড়ী জেঠী দিদিরা আমাকে দেখিলেই “শিব নাচি নাচি যায়” বলিয়া আমার অভ্যর্থনা করিতেন । খোড়া জ্যাঠতুতো বোন -আমি বোধ হয় ভিতরে ভিতরে চিরদিন প্রশংসাপ্রিয় মানুষ। এ দুর্বলতাটা শৈশব হইতেই আছে। আমাদের পাশের বাড়ীতে আমার একজন জ্ঞাতি জেঠার একটি খোড়া মেয়ে ছিল, সে বোধ হয় আমার অপেক্ষা দুই তিন বৎসরের বড় ছিল । সে আমাকে ভুলাইয়া রোজ প্রাতে আমার খাবার হই”, যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য চাহিয়া খাইত। আমি যেই খাবারের ধামীট হাতে" করিয়া ঘর হইতে বাহির হইতাম, আমনি সে আমাকে মিষ্টস্বরে ডাকিত, “আগাশ দাদা! এখানে এস।” সে তাদের দাবা হইতে নামিতে পারিত না, - কাজেই আমাকে যাইতে হইত। কেন যে সে আমাকে “আগাশ দাদা” বলিত জানি না। যতই আমি তাহাদের দাবার দিকে অগ্রসর হাইতাম, ততই তার মিষ্ট কথার মাত্রা বাড়িত, “কি লক্ষ্মী ছেলে, কি সুন্দর ছেলে,” ইত্যাদি। আমি আহিলাদে আটখানা হইয়া সেই দাবায় গিয়া উঠিতাম, অমনি সে বলিত, “এস না ভাই, দুজনের খাবার মিশিয়ে খাই।” এই বলিয়া তার ধামীর খাবারগুলি আমার ধামীতে ফেলিয়া থাবা থাবা