পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

›w8ፃ-¢ (b ] প্রপিতামহ 86 ঘর ছিল। সে জন্য সমগ্র ঘরটি ঠাকুরঘর বলিয়া উক্ত হইত। ঠাকুরঘরে এক পাথরের বড় শিব, এক কাষ্ঠনির্ম্মিত পঞ্চানন, এক স্ফটিকনির্ম্মিত বাণলিঙ্গ শিব, এক শালগ্রাম শিলা, এই চারি ঠাকুর থাকিতেন। বোধ হয় প্রপিতামহের অন্নপ্রাশনের সময় পাথরের শিবের প্রতিষ্ঠা হয় ; আমার পিতার অন্নপ্রাশনের সময় কাষ্ঠনির্ম্মিত পঞ্চাননের প্রতিষ্ঠা হয় ; এবং অপর দুইটি ঠাকুর বোধ হয় কুলক্রমাগত। প্রপিতামহেব যতদিন শক্তি ছিল, তিনি নিত্য ঠাকুরঘরে গিয়া ঐ ঠাকুরগুলি পূজা করিতেন। কিন্তু আমি যখন দেখিয়াছি, তখন তিনি আর ঠাকুরপূজা করিতে ঠাকুরঘরে যান না ; আমার পিসা মহাশয় প্রভৃতি অন্য লোকে ঠাকুরপূজা করেন। স্নানের প্রতি প্রপিতামহ মহাশয়েব বড় ভয় ছিল, এজন্য মাসে দুই চাবিবার মাত্র স্নান করান হইত। কেন যে স্নানে ভয় ছিল বলিতে পারি না। দেখিতাম, মাথায় বা গায়ে জল দিলে “বাপারে মারে” করিয়া পাড়ার লোক জড় করিতেন। সেই জন্য প্রতিদিন প্রাতে কাপড় ছাড়াইয়া সন্ধা আহ্নিকে বসান হইত। আমি চলিতে বলিতে শিখিলেই তাঁহাকে ধরিয়া ঘরেব বাহির করা, শোচে লইয়া যুওয়া, তাহাব মুখ ধুইবার জল আনিয়া দেওয়া, কাপড় আনিয়া দেওয়া, প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কার্য্যের ভাৱ আমার প্রতি অৰ্পিত হইয়াছিল। পূর্বেই বলিঙ্কাছি, তিনি আমাকে অতিশয় ভালবাসিতেন। আমি তাহাকে সরু গলাতে “পো” •ৰুলিয়া ডাকিলেই তিনি পুলকিত হইয়া উঠিতেন। কোনও কাজে আমার দরকার হইলেই আমাকে “বাবা” । “বাবা” বলিয়া ডাকিতেন। সর্ববিষয়ে আমাকে অতিরিক্ত আদর দিতেন। মা আমাকে মারিলে আমি কঁাদিতাম ; আমার ক্রন্দনের স্বর যদি তেঁাহার কানে যাইত তাহা হইলে “বাবা কঁদে কেন ?” বলিয়া রাগিয়া ফাটাফাটি করিতেন। এইজন্য মা মারিলেই আমি আকাশ-পাতাল হঁ করিয়া পো-র নিকট গিয়া কঁাদিতাম। "