পাতা:আত্মচরিত (২য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

89 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ পেটুক ছেলে ।-পাে অধ্যাপক ছিলেন, বাড়ীতে বসিয়া বিদায় আদায় যাহা উপাৰ্জন করিতেন, তাহাতেই সুখে সংসার চলিত। কখনও কখনও গ্রামের বিষয়ী লোকদিগের গৃহে ক্রিয়া কর্ম্ম হইলে, পো-র জন্য বিদায়ের ডালি আসিত। ডালির অর্থ একখানি সরাতে একটু চিনি ও দশ বারটা সন্দেশ, তৎসহ একটি ঘড়া, কি একটী গাড়, কি কতকগুলি মুদ্রা। আমি বাহিরে খেলা করিতে করিতে যদি দেখিতাম যে ডালি আমাদের ভবনের অভিমুখেই যাইতেছে, তখনি সঙ্গ লইতাম । প্রপিতামহ মহাশয় বাহির বাড়ীর দিকে এক রকে বসিয়া জপ করিতেন। লোকে ডালিটী সম্মুখে রাখিয় তাহার হাত ধরিয়া ছুয়াইয়া দিত। তিনি বুঝিতেন যে ডালি আসিয়াছে। জিজ্ঞাসা করিতেন, “কাব বাড়ী হতো।” ডালি-বাহক চীৎকার করিয়া নামটা বলিয়া দিত। তখন পো আমাকে ডাকিতেন “বাবা!” আমি অমনি ছোট ছোট অঙ্গুলিতে র্তাহার গা ছুইয়া দিতাম ; ভাবিতাম, বেশি চেচাইলে মা শুনিতে পাইবেন। প্রপিতামহ বুঝিতেন, বাবা উপস্থিত। টাকাগুলি নিজের কাছে রাখিয়া বলিতেন, “এই সন্দেশের সরা মাকে নিয়া দেও।” বাবা তা সরাখানি লইয়া একান্তে দাড়াইয়া অধিকাংশ সন্দেশ খাইলেন, শেষে রান্নাঘরের কাছে গিয়া বলিলেন, “মিত্রের বাড়ী থেকে ডালি এসেছিল, ঐ সে সরা”, এই বলিয়াই রান্নাঘরের দাবাতে সরাখানি রাখিয়াই দৌড় । মা রাগিয়া পো-র নিকট আসিয়া বকাবিকি করিতেন। বলিতেন, “আমাকে কি ডাকতে পার না ? বড় যে “বাবা” “বাবা’ কর, ঐ বাবা সব সন্দেশ খেয়ে ফেলেছে।” প্রপিতামহ মহাশয় শুনিয়া হাসিয়া উঠিতেন, “হাঃ হাঃ বেশ করেছে, ওর জন্যই তা সব।” যখন সরাখানি আমার হাতে না পড়িয়া মায়ের হাতে পড়িত, তখন পো হাত দিয়া সন্দেশগুলি গণিয়া রাখিতেন । রপর তঁাকে প্রতিদিন কয়টা করিয়া সন্দেশ দেওয়া হইত। তাহা গণিতেন। যদি দেখিতেন অধিকাংশ তাকে দেওয়া হইয়াছে. তাহা হইলে