পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৪ সালের আশ্বিনের ঝড় vd [ ۹وا ۔ جواسطہ “ঘুন্দাবন-বিলাসিনী রাই আমাদের” ইত্যাদি কীর্ত্তনটি গাইতেছেন। তাহাকে বলা গেল, “মশাই, গান রাখুন, কোমর বাধুন; এ ঘর যে পড়ে।” তিনি হাসিয়া বলিলেন, রেখে দেও ঘাঁর পড়া, গাইতে বড় ভাল লাগছে ; শোন শোন কীর্ত্তনটা শোন।” আর শোন । চড়াচড় করিয়া ঘর হেলিতে লাগিল, আমরা দৌড়িয়া বাহিরে গেলাম, সে ভদ্রলোকটি চাপা পড়িলেন। যেই ঘরের বাহির হওয়া, অমনি আমাদিগকে ঝড়ে উড়াইয়া কোথায় লহয় গেল! সৌভাগ্যক্রমে আমার স্বগ্রামবাসী সেই যুবক বন্ধুটির সহিত আমি হাতে হাত বাধিয়াছিলাম ; আমাদের দুই জনকে অধিক দূরে লইয়া থাইতে পারিল না। একখানা দোকান ঘর পড়িয়া গিয়া তাহার। দুখান চাল মাটিতে পড়িয়া দাড়াইয়া ছিল, আমরা দুজনে গিয়া তাহার উপরে পড়িলাম। পড়িয়া ভাঙ্গা ঘরের খুঁটি ধরিয়া ঝড় ভোগ করিতে ও থর থর করিয়া কাপিতে লাগিলাম। দাড়াইয়া দাড়াইয়া দেখি, সেই কীর্ত্তনকারী ভদ্রলোকটি পূর্ব্বকার দোকাশ ঘরের চাল ফুড়িয়া উপরে উঠতেছেন। আমাদিগকে অদূরে দেখিয়াই তিনি হাসিতে গলেন, এবং অতি কষ্টে আমাদিগের নিকট আসিয়া হাসিয়া বলিলেন, “বড় পিতৃপুণ্যে বেচে গেছি। আপনারা বোধ হয় ভাবছিলেন মারা পড়েছি। আরও কিছু দিন কর্ম্মভোগ বাকি আছে কি না, এখন কেন যাব ?” বলিয়া খুব হাসিতে লাগিলেন। তার সেই হাসি আমার আজও মনে আছে। কত বার ভাবিয়াছি, এরূপ সুখে দুঃখে প্রসন্ন চিত্ত পাওয়া বড় সৌভাগ্যের বিষয়। কতকগুলি মানুষ এরূপ আছে, যাহদিগকে কিছুতেই বিষন্ন করিতে পারে না। ইহাদের অবস্থা স্পািহণীয়। কিয়ৎক্ষণ তিন জনে ঝড় ভোগ করিয়া পরামর্শ করা গেল যে, অদূরে রাণী রাসমণির কাছারি বাড়ী দেখা যাইতেছে,-সে গ্রামটা তারই জমিদারী,-সেই কাছারিতে গিয়া আশ্রয় লওয়া যাউক । তিন জনে হাত ধরাধরি করিয়া বাহির হইলাম। কাছারি বাড়ীর নিকটস্থ হইতে