পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬২-৬৭] বিলাত ফেরত ডাক্তারকে লইয়া কবিতা যুদ্ধ o S লিখিতে উৎসাহিত হইতােম। কবিতা লেখা সূত্রে প্যারীচরণ সরকার মহাশয়ের সহিত আমার একটু ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ হয়। তিনি তখন প্রেসিডেন্সী কলেজে প্রফেসারী করিতেন, একী এডুকেশন গেজেটের সম্পাদক ও সুরাপান-নিবারিণী সভার সভাপতি ছিলেন । আমি তঁর কাগজে প্রথমে কয়েকটি ছোট ছোট কবিতা মুদ্রিত করি। তাহাতে তিনি প্রীত হন, এবং আমাকে লিপিতে উৎসাহিত করেন। বিলাত ফেরত ডাক্তারকে লইয়া কবিতা যুদ্ধ।— ইহার পরে এক ঘটনা ঘটিল, যাহাতে আমার কবিত্ব শক্তিকে আর এক দিকে লইয়া গেল। আমাদের ভবানীপুরে এক জন বিলাত ফেরত ডাক্তার আসিয়া বসিলেন ; তঁহার তাব ভাব চাল চলন সবই ইংরাজী ধরণের । তিনি নিজের দ্বারে এক সাইন বোর্ড দিলেন, তাহাতে ‘ডট’ বলিয়া নিজের উপাধি লিখিলেন। এই লইয়া আমাদের যুবক দলে হাসাহাসি পড়িয়া গেল। আমনি আমি বাঙ্গালীর সাহেবিয়ানার উপর বিদ্রুপ বর্ষণের জন্য বিলাত ফেরত বাঙ্গালী সাজিয়া ‘এস এন ডটু’ নাম লইয়া এডুকেশন গেজেট কবিতা লিখিতে লাগিলাম ; বাঙ্গালীর প্রিয় যাহা তাহার উপরে বিদ্রুপ বর্ষণ করিতে লাগিলাম ; এবং ইংরাজী যাতা কিছু তাহার উপর আদর দেখাইতে লাগিলাম। স্বদেশী ভাবাপন্ন হইয়া আর এক জন কবিতাতে তাহার উত্তর দিতে লাগিলেন। সপ্তাহের পর সপ্তাহ এই কবিতা যুদ্ধ চলিতে লাগিল, চারি দিকে একটা চৰ্চা উঠিয়া গেল। আমার কবিতাতে কাহারও বুঝিতে বাকি থাকিল না যে, আমিও স্বদেশী ভাবাপন্ন, কেবল সাহেবী ভাবাপন্ন ব্যক্তিদিগকে বিদ্রুপ করিবার জন্য লেখনী ধারণ করিয়াছি। ঐ সকল কবিতার দুই এক ছত্র মনে আছে। তাহ দেখিলে সকলে হাসিবেন । আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কবি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রশংসা করাতে আমি বঙ্গভূমির প্রতি লক্ষ্য করিয়া লিখিয়াছিলাম