পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৮, ৬৯ ] উপেন্দ্রনাথ দাসের বিধবাবিবাহ দেওয়া Y MONS) বিবাহ দেওয়া যাইবে, এই উৎসাহেই কলেজ হইতে বিদায় লইয়া তাহদের সহিত যাত্রা করিলাম । আমরা তিনটি যুবক, গাড়িতে মেয়েটির জায়গা মাত্র আছে। গাড়ি গিয়া ভবানীপুরে এক গলির মোড়ে দাড়াইল। কথা ছিল, মেয়েটির জ্যেষ্ঠ ভগিনী দিব। দ্বিপ্রহরের সময় তাহাকে গাড়িতে তুলিয়া দিয়া যাইবে। তাহা হইল না ; আমরা অনেক ক্ষণ দাড়াইয়া রহিলাম, মেয়েটি আসিল না। পরে সংবাদ পাওয়া গেল, মেয়েটি দিনের বেলা আসিতে পারিল না, সন্ধ্যার পরে আবার আসিয়া অপেক্ষা করিতে হইবে। কার্য্যোদ্ধার না করিয়া বাড়ীতে ফেরা হইবে না, এই পরামর্শ স্থির হওয়াতে আমরা গাড়ি হাকাইয়৷ ইডেন গার্ডেনে গেলান, এবং পাউরুটি ও কলা কিনিয়া বৃক্ষ তলে বসিয়া উত্তম রূপে টিফিন করিলাম। সন্ধ্যা অতীত হইলে আবার গাড়ি করিয়া সেই গলির মোড়ে আসিয়া দাড়াইলাম। দাড়াইয়া দাড়াইয়া প্রায় রাত্রি দশটা বাজিয়া গেল, মেয়ের দেখা নাই। অবশেসে দুইটি স্ত্রীলোক আসিয়া উপস্থিত। শুনিলাম, তাহার এক জন ঐ মেয়ে এবং অপর জন ঐ মেয়েটির জ্যেষ্ঠ সহোদরা । মেয়েটি আমাদের গাড়িতে উঠিলেন। যেই উঠা অমানি আমরা উৰ্দ্ধশ্বাসে গাড়ি হাকাইলাম । উপোনের আদেশ ক্রমে গাড়ি গিয়া তাহার সম্পাদিত সংবাদপত্রের প্রেস ও আপীসের দ্বারে লাগিল। মেয়েটিকে সেখানে গিয়া নামান হইল । সেটা আপীস ও পুরুষদের বাসা ; স্ত্রীলোকের বাসের যোগ্য নহে। আমি দেখিলাম মেয়েটি কঁাপিতেছে। তখন আমার হুস হইল। আমি উপেনকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “কবে বিয়ে হবে, আর তত দিন একে কোথায় রাখা হবে ?” উপেন বলিলেন, “বিবাহ কাল রাত্রে হবে, আর ওকে সে পর্য্যন্ত এখানেই রাখা যাবে।” তখন আমি রাগিয়া উঠিলাম ; বলিলাম, ‘তা কখনই হবে না। এমন জানলে আমি এ কাজে থাকতাম না। এই পুরুষের দলে ও মাতালের মধ্যে একে রাখা হবে, তা হইতে পারে না ।”