পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

èv Or শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৫ম পরিঃ পাশের ঘরে ছিলেন। তিনি এই বিপদের অবস্থা দেখিয়া তাহার ঘর ছাড়িয়া দিয়া অন্যত্র গেলেন। আমি উপোনের চিকিৎসার জন্য অন্নদাচরণ খাস্তগির মহাশয়কে ডাকিলাম। তিনি আমাকে বড় ভালবাসিতেন ; তিনি বিনা পয়সায় উপেনের চিকিৎসার ভার লাইলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মহানুভবতা । (১) পিতা-পুত্রে মিলন সংঘটন -এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সদাশয়তার এক নিদর্শন পাই, তাহা স্মরণ রাখিবার যোগ্য। আমার বাড়ীতে আসিয়া উপোনের পীড়া বৃদ্ধি পাইল। এমন কি, তঁহার জীবনের সম্বন্ধে আমরা নিরাশ হইতে লাগিলাম। এই অবস্থাতে উপেন এক দিন আমাকে বলিলেন, “যদি আমার বাবার সঙ্গে এক বার দেখা করিয়ে দিতে পাের, বড় ভাল হয় ! আমি বোধ হয় আর বেশী দিন বাঁচব না।” শ্রীনাথ দাস মহাশয়ের সহিত আমার আলাপ পরিচয় ছিল না, সুতরাং আমি নিজে গিয়া অনুরোধ করিতে পারি না। কি করি, এই চিন্তায় প্রবৃত্ত হইলাম। অবশেষে মনে হইল, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দ্বারা শ্রীনাথ দাস মহাশয়কে ধরিয়া আনিতে হইবে। তাই এক দিন প্রাতে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট গেলাম। তিনি যে উপেনের গুঢ় চরিত্রের কথা পূর্বেই শ্রীনাথ দাস মহাশয়ের মুখে শুনিয়া, তঁহার প্রতি হাড়ে চটিয়া ছিলেন, আমি তাহ জানিতাম না । আমি উপেনের সংশ্রবে থাকি ও তঁহাকে বাড়ীতে স্থান দিয়াছি শুনিয়াই তিনি আমাকে অনেক তিরস্কার করিলেন ; বলিলেন, “কি, যাকে দেখলে পা থেকে মাথা পর্য্যন্ত জুতা মারতে ইচ্ছা করে, তার হ’য়ে তুই আমাকে অনুরোধ করিস ?” আমি বুঝিলাম তাহা দ্বারা এ কাজ হইবে না। আমি । বলিলাম, “আপনি বাপ-বেটায় দেখা করিয়ে না দিলে আর কারও দ্বারা হবে না। তবে আমি যাই । কি আর করব। উপেনের শেষ অনুরোধটা রাখতে পারা গেল না।” এই বলিয়া উঠিতে প্রবৃত্ত হইলাম। আমাকে বিরাস বদনে উঠিতে দেখিয়াই বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, “যাস নে,