পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মহানুভবতা Nà NDS هو وسام والا রোসা ; মরণ কালে বাপকে দেখতে চেয়েছে, শুভ বুদ্ধি হয়েছে, এটাও ভাল ; দেখি কিছু করতে পারি কি না।” একটু চিন্তা করিয়াই বলিলেন, “কাল প্রাতে ৭টা ৮টার মধ্যে তার ব্যাপকে তোর বাড়ীতে আনিব, তুই ঘরে থাকিস।” আমি চলিয়া আসিলাম। তৎপর দিন বিদ্যাসাগর মহাশয় যে করিয়া শ্রীনাথ দাস মহাশয়কে আমার বাসাতে আনিয়াছিলেন, তাহ শুনিলে বিস্মিত হইতে হয় । তাহার বিবরণ এই । সেই দিন প্রাতে সাতটার সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় শ্রীনাথ দাস মহাশয়ের ভবনে গিয়া উপস্থিত। উপস্থিত হইয়া শ্রীনাথ বাবুকে বলিলেন, “শ্রীনাথ, তোমার গাড়ি যুত্ততে বল দেখি, তোমাকে এক জায়গায় যেতে হবে।” শ্রীনাথ বাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোন জায়গায় ?” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, “আঃ চল না ; রাস্তায় বলব।” শ্রীনাথ বাবু গাড়ি যুতিতে আদেশ করিলেন। দুই জনে গাড়িতে বসিয়া শ্রীনাথ বাবুদের গলি হইতে বাহির হইয়া বড় রাস্তায় আসিলে বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, “কোথায় নিয়ে যাচ্ছি, জান ? তোমার ছেলে উপেন পীড়িত হ’য়ে কাশী থেকে এসে এক বন্ধুর বাসায় উঠেছে। তার ব্যায়রাম বড় শক্ত, বঁাচে কি না সন্দেহ । সে মৃত্যু শয্যায় পড়ে তোমাকে দেখতে চেয়েছে। তাই তার বন্ধুর অনুরোধে তোমাকে নিতে এসেছি।” এই কথা শুনিয়া শ্রীনাথ বাবু রাগিয়া উঠিলেন ; বলিলেন, “কোচম্যান গাড়ি ফেরাও ।” তাহ শুনিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিয়া উঠিলেন, “গাড়ি থামাও, গাড়ি থামাও ; আমি নামাব।” কোচম্যান গাড়ি থামাইলে তিনি যখন নামিতে যান, তখন শ্রীনাথ বাবু তার হাত ধরিয়া বলিলেন, “এ কি ? তুমি নাম যে ?” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, “আমায় ছাড়, ছাড়। তোমার সঙ্গে আমার এই শেষ বন্ধুতা। ছেলে যতই বিরাগভাজন হোক, সে মৃত্যু শয্যায় প’ড়ে বাবাকে দেখতে চেয়েছে; তুমি কিরূপ বাপ যে এমন সময়েও দেখা দিতে চাও না !” এই কথা শুনিয়া শ্রীনাথ বাবু ধীর হইয়া বসিলেন, এবং