পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. o শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৫ম পরিঃ 8 د কোচম্যানকে গাড়ি চালাইতে বলিলেন। ক্রমে তাহারা আমার বাড়ীতে আসিলেন। শ্রীনাথ বাবু পুত্রকে দেখিয়া চলিয়া গেলে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মুখে এই বিবরণ শুনিলাম। যাহা হউক, পিতা-পুত্রে দেখা হইল। উপেন পিতাকে কি বলিলেন, জানি না। আমি সেখানে ছিলাম না। শুনিলাম, মাপ চাহিয়াছিলেন। তাহার প্রমাণও দেখিলাম। তাহার পরে তাহার পিতা তীহাকে অর্থ সাহায্য করিতে লাগিলেন। শ্রীনাথ বাবু চলিয়া গেলে বিদ্যাসাগর মহাশয় দাড়াইয়া আমাকে উপোনের আর্থিক অবস্থার বিষয় প্রশ্ন করিতে লাগিলেন। তঁহার কপদক মাত্র ও সম্বল নাই শুনিয়া কঁাদিয়া ফেলিলেন। আমার তাতে ১০২ টাকা দিয়া বলিয়া গেলেন, “দেখিস, ওর স্ত্রী পুত্র যেন না ক্লেশ পায়। টাকার অভাব হ’লে আমাকে বলিস। তুই কিরূপে এত ব্যয় দিবি ?” যার প্রতি এত জাতক্রোধ ছিলেন, তাতারই দুঃখের কথা শুনিয়া তাহার চক্ষে জলধারা পড়িল ; কি দয়া ! এখানে একটা কথা উল্লেখযোগ্য আছে। এই সময়ে আমি সর্ব্বদা উপোনের সাহায্যের জন্য বদ্ধপরিকর হইতাম বলিয়া আমাকে অনেকে উপহাস বিদ্রুপ ও ভৎসনা করিতেন। তঁহারা তাহার বিরুদ্ধে গোপনে কি শুনিয়াছিলেন, তাহা তখন জানিতাম না। আমি উপোনের পত্নীর মুখের দিকে চাহিয়া সকল প্রতিবাদ যেন ভুলিয়া যাইতাম। ভাবিতাম, এই মেয়েকে এই পথে আনিবার বিসিয়ে আমি সাহায্য করিয়াছি, এখন ক্লেশের মধ্যে দূরে দাড়ােন কি আমার পক্ষে উচিত হয় ? এই জন্য পুত্র সন্ত বাড়ীতে তাহাকে স্তান দিতাম ; নিজে ঋণ করিয়া উপেনের ঋণ শুধিয়া ভঁাতাদিগকে আসন্ন বিপদ হইতে বাচাইতামা ; সর্বদা তাহাদের বাড়ীতে সংবাদ লাইতাম। কিছুতেই আমাকে বিচলিত করিতে পারিত না । তখন তঁহাদের জন্য যে ঋণ করিয়াছিলাম, তাহা শুধিতে আমার বহু দিন গিয়াছে। তাহদের বিষয়ে আমার দায়িত্ব যখন স্মরণ করিতাম,