পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ প্রথম শেষ ভাগে আমার-জবংশীয় ব্রাহ্মণগণের মধ্যে এক সময়ে একই গ্রামে ১০/১২ খানি টােল চতুষ্পাঠী ছিল। তন্মধ্যে আমার প্রপিতামহ স্বৰ্গীয় রামজয় ন্যায়ালঙ্কার মহাশয়ের একখানি। ইনি একশত তিন বৎসর বয়স পর্য্যন্ত জীবিত ছিলেন । ইহাকে আমি ১০১২ বৎসর বয়স পর্য্যন্ত দেখিয়াছি। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে আমার বাল্যজীবনের বর্ণনাপ্রসঙ্গে ইহার কথা অনেক বলিতে হইবে। পিতামহী ।-আমার পিতামহ মহাশয় স্বগ্রামেই কাঞ্চায়ন গোত্রীয় ব্রাহ্মণদিগের গৃহে বিবাহ করিয়াছিলেন। এই কাশ্বায়ন বংশীয়গণ বড় অহঙ্কত ও তেজী মানুষ ছিলেন। আমার পিতামহী ঠাকুরাণী লক্ষ্মীদেবী সেই বংশের কন্যা । তিনিও অতিশয় তেজস্বিনী নারী ছিলেন । আমাদের গৃহে এরূপ প্রবাদ আছে যে, তঁহার ঘরে এক বার চোর ঢুকিয়া নিদ্রিতাবস্থায় তাহার কণ্ঠদেশ হইতে কণ্ঠাভরণ হরণ করিবার চেষ্টা করিতেছিল ; তিনি হঠাৎ জাগ্রত হইয়। এরূপ বলের সহিত চোরের হাত ধরিলেন যে তঁহার হস্ত হইতে নিস্কৃতি পাওয়া তার পক্ষে কঠিন হইয়া দাড়াইল। অনেক টানাটানির পর চোর কোনও মতে নিস্কৃতি পাইল । আর একটি গল্প ইহা অপেক্ষা ও অধিক সাহস ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের পরিচায়ক। সেটি এই। সেকালে আমাদের গ্রামে শীতকালে মধ্যে মধ্যে বাঘ দেখা দিত। গ্রামটি সুন্দরবনের মধ্যেই বলিলে হয়। কয়েক ক্রোশের মধ্যে আকাট জঙ্গল ছিল। গ্রামের চতুস্পার্থেও বন-জঙ্গল যথেষ্ট ছিল। সুতরাং বাঘের আসা কিছুই বিচিত্র ছিল না। এই কারণে এই নিয়ম প্রবর্ত্তিত হইয়াছিল যে, এক শাখাভূক্ত চারি পাঁচ পরিবার একত্র বাস করিয়া সমগ্র পাড়াটি এক বড় প্রাচীর দিয়া ঘিরিয়া রাখিত ; সম্মুখের দ্বার এক, খিড়কীর দ্বার ভিন্ন ভিন্ন। এই বন্দোবস্তে কর্মজ কর্ম্ম চলিত। আমাদের কয়েক ঘর জ্ঞাতির সহিত আমাদের বাড়ীটি। এইরূপ