পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৬৯, ৭০ ] উন্নতিশীল দলের মাঘোৎসবে যোগদান > ○○ মহাশয় তঁাহার কাগজে ও কথাবার্ত্তাতে ইহাদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন, “এ নেড়ানোড়ী কাণ্ড কেন ?” তদ্ভিন্ন হেমচন্দ্র বিদ্যারত্ন মহাশয়ও অনেক উপহাস বিদ্রুপ করিতে লাগিলেন। সর্বোপরি, আমি শাক্ত বংশের ছেলে, বৈষ্ণবদের কীর্ত্তনের প্রতি পূৰ্বাবধি অতিশয় অশ্রদ্ধা ছিল। এমন কি, কোন যাত্রা গান শুনিতে গিয়া যদি দেখিতাম খোল করতাল আসিল ও কীর্ত্তন আরম্ভ হইল, অনেক সময় সে স্থান পরিত্যাগ করিতাম। আমি ভাবিলাম, উন্নতিশীল দল রাস্তাতে ঢলঢলি করিতে যাইতেছে। এই ভাবিয়া বিরক্ত চিত্তে ১১ই মাঘ সকাল বেলা সে দলের দিকে না গিয়া আদি সমাজের উপাসনাতে গেলাম। উপাসনান্তে আদি সমাজের সিড়ী দিয়া নামিয়া আসিতেছি, এমন সময় কয়েক জন বাবু আসিতেছেন ; তঁাহারা বলিতে বলিতে আসিতেছেন, “মহাশয়, দেখলেন না ত, কেশব সহর মাতিয়ে তুলেছেন।” নগরকীর্ত্তনে হাস্যাস্পদ না তইয়া কৃতকার্য্য হইয়াছেন, এই কথাটা বড় নূতন লাগিল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “মহাশয়, সে কি রকম ?” তখন তঁাহারা আমার হস্তে নগর কীর্ত্তনের কাগজ দিলেন। আমি সেই সিড়িীতে দাড়াইয়া পড়িতে লাগিলাম। তাহাতে আছে— তোরা আয় রে ভাই, এত দিনে দুঃখের নিশি হ’ল অবসান, নগরে উঠিল ব্রহ্মনাম । নর নারী সাধারণের সমান অধিকার, যার আছে ভক্তি পাবে মুক্তি, নাহি জাত বিচার। ইত্যাদি। এই আহবান ধ্বনি আমার প্রাণে বাজিল, আমার যেন মনে হইল, আমাকে ডাকিতেছে। ইহাতে ব্রাহ্মধর্ম্মের যে আদর্শ আমার নিকট ধরিল, তাহাতে আমার প্রাণ মুগ্ধ করিয়া ফেলিল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, "ইহাদের উৎসব হবে কোথায় ?” শুনিলাম সিন্দুরিয়াপটীস্থ গোপাল মল্লিকের বাড়ীতে ; আমি সেই দিকে চলিলাম। উপাসনার পর প্রাতে